অন্য রকম ঈদের শুভেচ্ছা

>

করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে আমাদের জীবনের বাস্তবতা। দেশ–বিদেশের পাঠকেরা এখানে লিখছেন তাঁদের এ সময়ের আনন্দ–বেদনাভরা দিনযাপনের মানবিক কাহিনি। আপনিও লিখুন। পাঠকের আরও লেখা দেখুন প্রথম আলো অনলাইনে। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]

প্রতিবছর কোরবানির ঈদ আসার এক মাস আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় ঈদের প্রস্তুতি। কোরবানির মাংস কোথায় রাখা হবে, কাকে কাকে দেওয়া হবে, আর অতি উৎসাহে পরিকল্পনা চলে কোরবানির মাংস দিয়ে কী কী বানানো হবে।

ঈদ আসার ১০–১২ দিন আগে থেকেই হাটের মাইকিং শুনতে থাকি। বাসার সামনেই যে শাহজাহানপুর মাঠ। সেই সঙ্গে শুনতে পাই গরু-ছাগলের ডাক। ভেসে আসে হাটের গবাদিপশুর গন্ধ। মনে হয় বাড়িতে নয়, গরুর হাটেই বসে আছি।

টিভি ছাড়লে তো কেবল গরুর হাটেরই খবর। রিপোর্টার হয় গাবতলী, নয়তো আফতাবনগরের হাট থেকে খবর পাঠাচ্ছেন। কোন গরুর কত দাম উঠল, ব্যবসায়ীরা কতটা লাভ করছেন, বাড়ির ছোট সদস্যরা ছাগলের দড়ি ধরে মুখে একচিলতে হাসি নিয়ে বাড়ি যাচ্ছে। রাস্তায় বের হলে গাড়ি, বাস আর রিকশার পাশাপাশি গরু-ছাগল। আশপাশ থেকে কৌতূহলী প্রশ্ন, ‘ভাই, কত নিল?’ কেউ বলে, ‘ভাই, জিতসেন, জিতসেন।’ ঈদের আগের দু দিন বাড়ির গ্যারেজটাই যেন পুরোদস্তুর গরুর হাট। এবার তো অনেকের মধ্যেই দ্বিধা, কোরবানি দেবেন কি না।

কিন্তু এবার তো সবকিছুকে হারিয়ে করোনাভাইরাসই জিতে যাচ্ছে। অনেক প্রতীক্ষার পর মঙ্গলবার হঠাৎ শুনতে পেলাম, মাইকিং হচ্ছে হাট থেকে। মন ভরে গেল। আগের একটা অভিজ্ঞতা তো অন্তত ফিরে এল। একটা মিল তো পেলাম।

এই ঈদে পশু কেনার পাশাপাশি ফ্রিজ কেনারও ধুম পড়ে যেত। আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল হাটে যাব। ছেলেরা কেন এত খুশিমনে হাটে যায়, সেটা জানতে। সে ইচ্ছা বোধ হয় আর পূরণ হবে না। চারটা মাস ধরে তো ঘরেই বন্দী।

আবার কবে আগের মতো ঈদ পাব? ঈদে নতুন জামা কিনতে মার্কেটে যাব? মনে হাজার প্রশ্ন, কোনো উত্তর জানা নেই। তবু ঈদের শুভেচ্ছা না জানালে কি চলে!

সবাইকে ঈদ মোবারক।