সুরমা-কুশিয়ারার উৎসমুখে পানি বাড়ছে

সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার উৎসমুখে পানি বাড়ছে। সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লোভা নদীর মুখে সুরমার পানি বেড়ে বিপৎসীমার স্তরে অবস্থান করছে। আর সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী অমলসিদ এলাকায় কুশিয়ারার উৎসমুখে পানি বেড়ে বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে আজ শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।

সিলেট ও সুনামগঞ্জ দিয়ে প্রবহমান সুরমা নদী। সীমান্তবর্তী লোভাছড়া থেকে বাংলাদেশে নেমে আসা লোভা নদীর সঙ্গে সংযোগ হয়েছে। পাউবো পানির স্তর পরিমাপ করে কানাইঘাট পয়েন্ট থেকে। এ স্থান সুরমার উৎসমুখ হিসেবে পরিচিতি।

আজ সকালে ও দুপুরে দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে জানা গেছে, সুরমার কানাইঘাট পয়েন্টে ১২ দশমিক ৫৯ মিটার থেকে বেড়ে ১২ দশমিক ৭৫ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি। কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ মিটার। সকাল নয়টায় ১২ দশমিক ৭০ থেকে বেড়ে বিপৎসীমার স্তরে অবস্থান নিয়েছে পানির প্রবাহ।

কানাইঘাট পয়েন্টের পাশে সিলেটের সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিতি লোভার পানি সকাল ছয়টায় ১৩ দশমিক ৮৬ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। দুপুর ১২টায় পানি কিছুটা কমেছে। সেখানে ১৩ দশমিক ৮১ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয় পানি। সুরমার সিলেট শহর পয়েন্টে পানি সকাল নয়টায় বেড়ে দুপুর ১২টায় এক ধাপ কমেছে। সেখানে পানির স্তর ১০ দশমিক ৪ মিটার।

পাউবো জানায়, ভারতের বরাক উপত্যকা থেকে নেমে আসা নদী বরাকের সঙ্গে মিলিত হয়েছে কুশিয়ারা নদী। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদ এলাকায় কুশিয়ারার উৎসমুখের ওই স্থান বরাক মোহনা হিসেবে পরিচিতি। কুশিয়ারার অমলসিদ পয়েন্টে গত বুধবার থেকে পানি বাড়া অব্যাহত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানি ১৪ দশমিক ৯৪ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। আজ সকালে ও দুপুরে পানি বেড়েছে। সকাল নয়টায় ১৫ দশমিক ৫ মিটার ও দুপুর ১২টায় ১৫ দশমিক ৭ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। এই পয়েন্ট ছাড়াও বিয়ানীবাজারের শেওলা, মৌলভীবাজারের শেরপুর ও সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির স্তর পরিমাপ করা হয়। এ নদীর মধ্যবর্তী অংশ ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় ফেঞ্চুগঞ্জে ৯ দশমিক ৮৫ মিটার থেকে বেড়ে ৯ দশমিক ৮৬ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া, কুশিয়ারার বাকি তিনটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো জানায়, কুশিয়ারা নদী সিলেটের জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর ও বালাগঞ্জ উপজেলা ছাড়াও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা দিয়ে প্রবহমান। কুশিয়ারা ও সুরমায় পানি বাড়লে সিলেট অঞ্চলের নদী অববাহিকা এলাকাগুলোয় বন্যার আশঙ্কা দেখা দেয়।