বঙ্গবন্ধু সেতুতে চারগুণ বেশি গাড়ির চাপ, ভোগান্তিতে মানুষ

ঢাকামুখী লেন ফাঁকা থাকলেও উত্তরবঙ্গমুখী লেনে আটকে আছে যানবাহন। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায়। ছবি: প্রথম আলো
ঢাকামুখী লেন ফাঁকা থাকলেও উত্তরবঙ্গমুখী লেনে আটকে আছে যানবাহন। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায়। ছবি: প্রথম আলো

স্বাভাবিক সময়ে বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৩ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। সেখানে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু করে আজ শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৩২১টি যানবাহন সেতু দিয়ে পার হয়েছে। অতিরিক্ত এই গাড়ির চাপে বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই পর্যন্ত ৬৫ কিলোমিটার মহাসড়কে দেখা দিয়েছে যানজট। ফলে করোনাকালের ঈদযাত্রায় বের হওয়া হাজার হাজার ঘরমুখো মানুষ রাস্তায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে।

আজ শুক্রবার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের এলেঙ্গা থেকে করটিয়া পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার ঘুরে দেখা যায়, উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গগামী যানবাহন একটির সঙ্গে একটি গা লাগিয়ে খুব ধীরগতিতে চলছে। কোথাও কোথাও আটকে আছে যানজটে। এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সিএনজি স্টেশনে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মাইক্রোবাসের চালক শহিদুল ইসলাম জানান, স্বাভাবিক সময়ে ঢাকা থেকে আড়াই ঘণ্টায় এলেঙ্গা আসা যায়। কিন্তু যানজট পারি দিয়ে তাঁর এলেঙ্গা পৌঁছাতে সময় লেগেছে আট ঘণ্টা। মির্জাপুর, পাকুল্যা, নাটিয়াপাড়া, করটিয়া, টাঙ্গাইল শহর বাইপাস মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যানজটে পড়তে হয়েছে।

ঢাকা থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে রওনা হওয়া শামীমুর রহমান জানান, পাঁচ ঘণ্টায় মির্জাপুর পর্যন্ত এসে দুই ঘণ্টা সেখানে যানজটে আটকা পড়েছিলেন। পরে একটু একটু করে আড়াই ঘণ্টায় মির্জাপুর থেকে ২০ কিলোমিটার পথ পারি দিয়ে করটিয়া পৌঁছেছেন।

মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, বাস, ট্রাকে গাদাগাদি করে মানুষ বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। ঢাকার বিভিন্ন হাটে গরু নিয়ে যাওয়া ট্রাকগুলো যাত্রী নিয়ে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের দিকে ফিরছে। এসব যানবাহনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে দুর্ভোগ পোহাতে দেখা যায় যাত্রীদের। তীব্র গরমে অনেক যাত্রী অসুস্থ হয়ে যান। যানজটে আটকে পড়া নারী যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেশি দেখা যায়। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে মহাসড়কের আশপাশের বাড়িতে যেতে হয় তাঁদের।

মহাসড়কে দায়িত্বরত টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শফিকুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সিরাজগঞ্জের দিকে গাড়ি টানতে না পারা, সেতুর ওপর গাড়ি বিকল হয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে পাঁচ দফায় ৮৯ মিনিট সেতুর টোল প্লাজা বন্ধ ছিল। এই কারণে যানজটে লেগে যায়। তা ছাড়া স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি যানবাহন এ রাস্তায় চলাচল করেছে। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে প্রতিদিন ১২-১৩ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হয়, সেখানে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত ৪৮ হাজার ৩২১টি যানবাহন বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়েছে। এর মধ্যে ৩২ হাজার যানবাহন উত্তরবঙ্গের দিকে গেছে।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় জানান, যানজট নিরসনে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। ছয় শতাধিক পুলিশ সদস্য মহাসড়কে টাঙ্গাইল অংশে দায়িত্ব পালন করছে।