কুশিয়ারার অমলসিদে এবার বৃষ্টি ছাড়াই পানি বাড়ছে

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত এলাকায় একটানা ভারী বৃষ্টি হলে সিলেট অঞ্চলের দীর্ঘতম নদী কুশিয়ারার উৎসমুখ অমলসিদ পয়েন্টে পানি বাড়ত। গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। তারপরও অমলসিদে পানি বাড়তে শুরু করেছে।

আজ সোমবার সকালে ও দুপুরে দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে এ কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।

কুশিয়ারা নদী সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ দিয়ে প্রবহমান। নদীর উৎসমুখ ভারতের বরাক উপত্যকা থেকে নেমে আসা নদী। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার অমলসিদ এলাকায় বরাক মোহনার এই অংশ কুশিয়ারার উৎসমুখ ও নদীর উজান দিক হিসেবে পরিচিতি। পাউবো নদীর পানি পরিমাপ করে অমলসিদ পয়েন্টে।

পাউবো জানায়, গত ১৬ জুলাই থেকে অমলসিদে কুশিয়ারার পানি কমছিল। এ কারণে এ নদীর ভাটির অংশের তিনটি পয়েন্টে বিয়ানীবাজারের শেওলা, মৌলভীবাজারের শেরপুর পয়েন্টে পানিতে ভাটার টান পড়ে। অপরিবর্তিত থাকা নদীর মধ্যবর্তী অংশ সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্ট দিয়েও গত ২৬ জুলাই থেকে পানি কমছিল। সীমান্তের ওপারে ভারী বৃষ্টি হলে পানি বাড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। গতকাল রোববার থেকে আজ সোমবার দুদিন কোনো বৃষ্টিপাত ছাড়াই অমলসিদ পয়েন্টে পানি বাড়ায় পাউবোর নদ-নদী পর্যবেক্ষকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সিলেটে পাউবোর দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে জানা গেছে, অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ মিটার। গত শুক্রবার থেকে পানি কমছিল। প্রবাহিত হচ্ছিল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে। ২৪ ঘণ্টা কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। পানি কমে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় ১৪ দশমিক ৬০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকাল ছয়টার পানি পরিমাপে দেখা যায় পানি বেড়ে ১৪ দশমিক ৭৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল নয়টার পরিমাপে পানি আরও এক দফা বেড়ে ১৪ দশমিক ৮১ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। দুপুর ১২টায় সেখানে ১৪ দশমিক ৮৬ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। অমলসিদ পয়েন্টে আজ ও গতকাল দুদিনই ছিল বৃষ্টিপাতহীন। দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্যের ‘রেইনফল’ অংশে ‘শূন্য’ উল্লেখ রয়েছে।

পাউবোর নদ-নদী পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, বৃষ্টিপাত না থাকার পরও কুশিয়ারার অমলসিদ পয়েন্টে পানি বাড়ায় অন্যান্য পয়েন্টেও পানি বাড়তে পারে। তবে আজ দুপুর পর্যন্ত অমলসিদ ছাড়া বাকি তিনটি পয়েন্টে পানি কমছে। এর মধ্যে প্রায় এক মাস ধরে বিপৎসীমার ওপর থাকা কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও পানি কমছিল।

ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ মিটার। গতকাল সন্ধ্যায় ৯ দশমিক ৮১ মিটার থেকে নেমে আজ দুপুর ১২টায় ৯ দশমিক ৭৮ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া, কুশিয়ারার শেওলা ও শেরপুর পয়েন্ট দিয়েও পানি কমছে। একইভাবে সুরমাসহ সিলেটের সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিতি জৈন্তাপুরের সারী, কানাইঘাটের লোভা ও কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদেও পানি কমছে।