করোনাকালে উন্নততর প্রযুক্তি যথা তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার ও অনলাইন সেবা কার্যক্রম বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতিকে সচল রাখার প্রচেষ্টা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও প্রথম আলোর যৌথ উদ্যোগে ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রযুক্তি ও ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে শিক্ষক, প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও তরুণ উদ্যোক্তারা অংশ নেন।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রেজাউল বারীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইউনিভার্সিটির ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিসার্চ অ্যান্ড সার্ভিসেসের পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম।
এরপর বর্তমান করোনা মহামারিতে দেশের অনলাইনভিত্তিক সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন চালডাল ডটকমের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা জিয়া আশরাফ ও ইন্সপায়ারিং বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান ফাহাদ।
অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী এম এ কাসেম বলেন, সামনে হয়তো রোবট দিয়ে চলতে হবে। তবে মনের জোর হারালে চলবে না, লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না। এ জন্য মানসিকতার পরিবর্তন করে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বিদ্যমান প্রেক্ষাপটে অনলাইন শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য আতিকুল ইসলাম বলেন, এখন তাঁদের ইউনিভার্সিটিতে সপ্তাহে তিন হাজারের বেশি ক্লাস অনলাইনে হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে স্বাভাবিক সময়ে যেখানে গড়ে ৮৮ শতাংশের মতো শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকতেন, এখন ৯৩ শতাংশের মতো উপস্থিত থাকছেন। আর বেশির ভাগই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অনলাইন ক্লাসে অংশ নিচ্ছেন।
প্রযুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ স্থানান্তর হওয়ার নানা উদাহরণ তুলে ধরেন এসবিকে টেক ভেঞ্চারস এবং এসবিকে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির বলেন, এখন স্কুলেও অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। যেটা আগে ভাবাও যায়নি। টেলিমেডিসিন সেবা চালু হয়েছে, বাসা থেকে বের না হয়ে কীভাবে সেবা পাওয়া যায়, সেগুলো ভাবা হচ্ছে। প্রযুক্তি দিয়ে সব নাগরিক সেবা দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ জন্য প্রত্যেকের হাতে প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে হবে। শুধু ঢাকা ও চট্টগ্রামের শহরগুলোই বাংলাদেশ নয়। গ্রামগঞ্জে সবার হাতে প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে হবে। সব সেবা যাতে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আসতে পারে, সেটা দেখতে হবে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহসভাপতি মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের হয়তো করোনা পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে। সেই সঙ্গে প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।’
সিটি ব্যাংকের আইটি শাখার প্রধান মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, ‘করোনা–পূর্ববর্তী সময়ে আমাদের শতকরা ৮৪ ভাগ গ্রাহক ব্র্যাঞ্চ ভিজিট পছন্দ করত এবং বাকি ১৬ ভাগ গ্রাহক ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করত। করোনাকালীন যা বেড়ে শতকরা ৬৮ ভাগ গ্রাহক ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করছে। এখনো ৩২ ভাগ গ্রাহক ব্র্যাঞ্চ ভিজিট পছন্দ করছে। আমরা এসব গ্রাহকে নিয়ে কাজ করছি। তাদের বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে কীভাবে ডিজিটালাইজড করা যায়, সেদিক নিয়ে কাজ করছি।’
পুরো আলোচনা থেকে উঠে আসা বিষয়গুলোর সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন প্রথম আলোর যুব কার্যক্রম ও ইভেন্ট বিভাগের প্রধান মুনির হাসান।
সবশেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য দেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সেসের ডিন জাভেদ বারী।
এ ছাড়া ওয়েবইনারের সহযোগী ছিল নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (ইসিই) এবং সেন্টার ফর ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিসার্চ অ্যান্ড সার্ভিসেস।