বরকত-রুবেলদের ৪৪ সহযোগী কোথায়

ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে বরকত ও তাঁর ভাই ইমতিয়াজ হাসান ওরফে রুবেল স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ৬০ সহযোগীর নাম বলেছিলেন। তাঁদের মধ্যে গতকাল পর্যন্ত পুলিশ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি ৪৪ জন এখনো অধরা। তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

ফরিদপুরে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখল ও টেন্ডারবাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৭ জুন বরকত ও তাঁর ভাই রুবেলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর একে একে গ্রেপ্তার করে ১৩ জনকে। এঁদের বিরুদ্ধে ৯টি মামলা হয়। একটি মামলা করে সিআইডি পুলিশ। সেই মামলায় আরও ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ১৬ জনের মধ্যে ১৩ জন ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এসব জবানবন্দিতে তাঁরা রুবেল-বরকতের সঙ্গে জড়িত ৬০ জনের নাম উল্লেখ করেন।

ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও ফরিদপুর সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল হক বলেন, যাঁরা ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন তাঁরা ফরিদপুর-৩ আসনের সাংসদ খন্দকার মোশাররফের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে অপকর্ম করেছেন।

বরকত-রুবেলের দেওয়া তালিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এ এইচ এম ফোয়াদ, ফরিদপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ বিন ওয়াজেদ, শহর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম, কামরুল হাসান ওরফে ডেভিড ও মোহাম্মদ আলী ওরফে মিনার, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, বরকতের চাচাতো ভাই  ও শহর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাফর ইকবাল হারুন মণ্ডল। এঁদের পুলিশ এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি।   

 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এঁদের বেশির ভাগই বর্তমানে আত্মগোপনে আছেন। কেউ কেউ ইতিমধ্যে পালিয়ে বিদেশে গেছেন বলেও শোনো যাচ্ছে। 

 দুই ভাইয়ের জবানবন্দিতে ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফকির বেলায়েত হোসেন, ঈশান গোপালপুরের ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলাম, ডিক্রিরচর ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ও আলীয়াবাদ ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওমর ফারুকের নামও রয়েছে। 

এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানদের নাম প্রকাশের পর তাঁরা প্রকাশ্যে আসছেন না। সবার ফোন বন্ধ রয়েছে।   

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিপুল ঘোষ বলেন, এই সন্ত্রাসীরা জেলা আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চেপে আওয়ামী লীগের প্রকৃত কর্মীদের থেকে দলকে বিচ্ছিন্ন করে সুবিধা নিয়েছেন। তাঁদের আইনের আওতায় আনতে হবে। 

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, বরকত ও রুবেলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে যাঁদের নাম এসেছে তাঁদের অনেকেই ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।