বৈরুতে নিখোঁজ দুই অভিবাসী কর্মী, ত্রাণ পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ

লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’। ছবি: আইএসপিআর
লেবাননে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘বিজয়’। ছবি: আইএসপিআর

লেবাননের রাজধানীতে বৈরুতে গত মঙ্গলবারের ভয়াবহ বিস্ফোরণে নতুন করে কোনো বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে বৃহস্পতিবার লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানা গেছে, ওই বিস্ফোরণের পর থেকে দুই বাংলাদেশির খোঁজ মিলছে না। নিখোঁজ দুই প্রবাসী কর্মীর সহকর্মীরা দূতাবাসে এসে ওই তথ্য দিয়েছেন।

এদিকে লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার আরও দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১০৬ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৮৫ জন প্রবাসী কর্মী এবং ২১ জন বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্য। বৈরুতের বন্দরের কাছে ওই বিস্ফোরণে চারজন প্রবাসী কর্মী মারা গেছেন। এ ছাড়া দেশটিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কাজে যুক্ত থাকায় বৈরুত বন্দরে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বিজয়’ এর ক্ষতি হয়েছে।

বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর লেবাননকে সহায়তার অংশ হিসেবে খাদ্য সামগ্রী ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। আগামীকাল শুক্রবার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি সি-১৩০ পরিবহন বিমানে করে ওই সব সামগ্রী লেবাননের উদ্দেশ্যে যাত্রার কথা রয়েছে।

বৈরুতের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: এএফপি
বৈরুতের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেলে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। ছবি: এএফপি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, লেবাননের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছারবেল ওহেবিকে বুধবার ফোন করে সে দেশে বিস্ফোরণে হতাহতদের ব্যাপারে সহানুভূতি জানিয়েছি। বিস্ফোরণে আহত বাংলাদেশিদের চিকিৎসাসহ সার্বিক সহযোগিতার জন্য লেবানন সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি। এ পর্যায়ে আমরা সেখানে খাবার, ওষুধ ও চিকিৎসক দল পাঠানোর ইচ্ছে প্রকাশ করি। তবে বিস্ফোরণে বৈরুতের বড় দুটি হাসপাতাল বিধ্বস্ত হওয়ায় তারা বলেছে চিকিৎসক পাঠানোর দরকার নেই। অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠালে চলবে। সেই অনুযায়ী আমরা শুক্রবার নাগাদ খাবার, ওষুধ এগুলো পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানান, চারজন ছাড়া নতুন করে আর কোনো বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে নৌবাহিনীর সদস্যদের মধ্যে গুরুতর আহত যিনি ছিলেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হয়েছে। এ ছাড়া নৌবাহিনীর আহত অন্য সদস্যরা হাসপাতাল থেকে তাদের কর্মস্থলে ফিরে গেছেন।

পোর্ট অব বৈরুতের একটি গুদামে এই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৩৭ জনের মৃত্যুর তথ্যের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আহত চার হাজারের বেশি মানুষ।
বিস্ফোরণে রাজধানী ও আশপাশ এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিস্ফোরণে ঘরবাড়ি হারিয়েছে ৩ লাখের বেশি মানুষ। ক্ষতির পরিমাণ ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার।