মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দিনমজুর আইয়ুবকে হত্যার অভিযোগ

দিনমজুর আইয়ুব আলীর হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাঁর বড় ছেলে ছামিউল ইসলাম। তাতিহাটী পশ্চিমপাড়া গ্রাম, শ্রীবরদী, শেরপুর, ৬ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো
দিনমজুর আইয়ুব আলীর হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাঁর বড় ছেলে ছামিউল ইসলাম। তাতিহাটী পশ্চিমপাড়া গ্রাম, শ্রীবরদী, শেরপুর, ৬ আগস্ট। ছবি: প্রথম আলো

মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দিনমজুর আইয়ুব আলীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিখোঁজের তিন দিন পর গত শনিবার শেরপুরের শ্রীবরদী থানা–পুলিশ উপজেলার খড়িকাটা খালের পানি থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। তিনি উপজেলার তাতিহাটী পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

আইয়ুব আলীর ছেলে মো. ছামিউল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে করে প্রতিবেশী রফিকুল ইসলামের ছেলে রাসেল ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে তাঁর (ছামিউল) বাবাকে হত্যার অভিযোগ আনেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে এলাকাবাসী আইয়ুব আলীর হত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ছামিউল বলেন, গত ৩০ জুলাই রাতে তাতিহাটী পশ্চিমপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রাসেল ও তাঁর পরিবারের লোকজন তাঁদের বাড়িতে যান। এ সময় রাসেলের মৎস্য খামার থেকে মাছ ধরার অভিযোগ এনে তাঁর (ছামিউল) বাবা আইয়ুব আলীকে হত্যার হুমকি দেন তাঁরা। এরপর ওই রাত থেকেই আইয়ুব আলী নিখোঁজ হন। ১ আগস্ট শনিবার তাতিহাটী পশ্চিমপাড়া গ্রামের খড়িকাটা খালের পানিতে আইয়ুব আলীর লাশ দেখতে পায় স্থানীয় লোকজন। সংবাদ পেয়ে তিনি (ছামিউল) ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি শনাক্ত করেন। এরপর শ্রীবরদী থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ওই দিন শ্রীবরদী থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা করা হয়।

গতকাল বুধবার ছামিউল বাদী হয়ে রাসেল মিয়াসহ ছয়জনকে আসামি করে তাঁর বাবা আইয়ুব আলীকে হত্যার অভিযোগ এনে শ্রীবরদীর সিআর আমলি আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শ্রীবরদী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।

ছামিউল বলেন, আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি না বুঝে লাশ উদ্ধারের দিন থানায় ইউডি মামলায় স্বাক্ষর করেছেন। তিনি এ ঘটনায় দায়ীদের বিচার ও শাস্তির দাবি জানান।

এ ব্যাপারে মামলার আসামি রাসেল মিয়ার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর বড় ভাই রিপন মিয়া ছামিউলের আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সন্দেহমূলক ও তাঁদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য ছামিউল এমন অভিযোগ করেছেন। তাঁদের মৎস্য খামার থেকে মাছ না ধরার জন্য তাঁর ভাই রাসেল আইয়ুব আলীকে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু কোনো ধরনের হুমকি দেননি।

অপর দিকে শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রুহুল আমিন তালুকদার বলেন, এ ঘটনায় পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে আইনানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আদালত থেকে এ ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান তিনি।