অতিরিক্ত যাত্রী বহন, ৫ লঞ্চের জরিমানা

ঈদ শেষে রাজধানী ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। প্রতিটি ফেরিতে করে আসছে হাজারের ওপরে যাত্রী। বৃহস্পতিবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ার এক নম্বর ঘাটে। ছবি: প্রথম আলো
ঈদ শেষে রাজধানী ঢাকায় কর্মস্থলে ফিরছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। প্রতিটি ফেরিতে করে আসছে হাজারের ওপরে যাত্রী। বৃহস্পতিবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ার এক নম্বর ঘাটে। ছবি: প্রথম আলো

অতিরিক্ত যাত্রী বহন করায় মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পাঁচটি লঞ্চের ১৩ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে। উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মু. রাসেদুজ্জামান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ জরিমানা করেন।

কর্মকর্তা রাসেদুজ্জামান বলেন, বৃহস্পতিবার মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে যেসব লঞ্চ শিমুলিয়ায় আসছিল, প্রতিটিতেই ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ বা তিনগুণ যাত্রী ছিল। খবর পেয়ে তিনি ঘাটে অভিযান পরিচালনা করেন। বিষয়টি টের পেয়ে লঞ্চগুলো মাঝ নদীতে থামিয়ে রাখেন চালকেরা। এতে করে যাত্রীরা আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় লঞ্চগুলোকে তীরে আনা হয়। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিনি অর্থদণ্ড করেন।

ভ্রাম্যমাণ আদালতে এমভি রাকিব, এমভি রোদেলা ও এমভি অর্পণ এন্টারপ্রাইজ নামের তিনটি লঞ্চকে তিন হাজার টাকা করে জরিমানা হয়। আর এমভি রাজিব ও এমভি মোহাম্মাদিয়া নামের অপর দুটি লঞ্চকে দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেদুজ্জামান। এদিকে জরিমানার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয় লঞ্চচালক ও মালিক সমিতি। তখন ভ্রাম্যমাণ আদালতের পক্ষ থেকে সাবধান করে দেওয়া হয়, আইনের পরিপন্থী কোনো কাজ করলে লঞ্চের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এ অবস্থায় আধঘণ্টা পরে আবার লঞ্চ চলাচল শুরু হয়। শুক্রবার সকাল থেকে ধারণ ক্ষমতার ভেতরে যাত্রীসংখ্যা রেখে লঞ্চ চলাচল করছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেদুজ্জামান।

রাতে ফেরি বন্ধ, দিনে কয়েকটি দিয়ে যান পারাপার
তীব্র স্রোত, নাব্যতা সংকট ও ঘাট সংকটের কারণে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি নৌপথে রাতে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হচ্ছে। দিনের বেলায়ও পারাপারের কাজে অল্পসংখ্যক ফেরি ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ। ফলে ঘাটের দুই পারে প্রায়ই আটকা পড়েছে শত শত যানবাহন। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী ও চালকেরা।

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, দেড় মাস ধরে পদ্মা নদীতে পানি প্রবাহ অস্বাভাবিক মাত্রায় বেশি। প্রচণ্ড স্রোতের কারণে ৯ দিনের ব্যবধানে শিমুলিয়ার চারটি ঘাটের মধ্যে ভিআইপি ও রো রো (বড়) ফেরির ঘাট দুটি বিলীন হয়েছে। আবার তীব্র স্রোতের বিপরীতে ফেরি চলতে গিয়ে যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। ফেরি চলাচলের চ্যানেলের মুখে পলি জমে তৈরি হয়েছে নাব্যতা সংকট। সব মিলিয়ে অস্বাভাবিক এক পরিস্থিতি। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতি রাতেই ফেরি বন্ধ রাখতে হচ্ছে। দিনের বেলাতেও অর্ধেকের কম ফেরি চলছে।

বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ফেরিঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. ফয়সাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে এক ও দুই নম্বর ঘাট সচল আছে। ১৬টি ফেরির মধ্যে ৭টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। স্রোতের তীব্রতা না কমলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হবে না। তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত যানবাহনকে বিকল্প পথ ব্যবহারের পরামর্শ দেন তিনি।