দৌলতদিয়া ঘাটে চার কিলোমিটার গাড়ির সারি

ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের চাপ। আবার স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত। ফলে প্রচুরসংখ্যক গাড়ি আটকা পড়ছে ফেরিঘাটে এসে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট মোড় এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের চাপ। আবার স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত। ফলে প্রচুরসংখ্যক গাড়ি আটকা পড়ছে ফেরিঘাটে এসে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট মোড় এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে পদ্মা ও যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রচণ্ড স্রোতের কারণে নদীতে ফেরি চলাচল করতে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের চাপ। ফলে দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। ঘাটে চার কিলোমিটারজুড়ে গাড়ির সারি পড়ছে।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয় সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন ধরে পদ্মা নদীতে পানির প্রবাহ অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়েছে। নদীতে প্রচণ্ড স্রোত রয়েছে। স্রোতের বিপরীতে চলতে ফেরিগুলোকে বেগ পেতে হচ্ছে। ফলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচলে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ বা তার বেশি সময় লাগছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্রোতের গতি বেড়ে গেছে। এ কারণেই ফেরি চলাচলে সময় দ্বিগুণ বা তার বেশি লাগছে। তা ছাড়া স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন ঘাটে যাত্রীবাহী বাস বেশি আসছে। এ কারণে ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তাঁরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ নৌপথে বর্তমানে ইউটিলিটি (ছোট) ৭টি, রো রো (বড়) ৯টিসহ মোট ১৬টি ফেরি চলাচল করছে বলে জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী পারাপারের অপেক্ষায় যানবাহনের দীর্ঘ সারি। দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে বাংলাদেশ হ্যাচারি পর্যন্ত সড়কে থেমে আছে তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস। এ ছাড়া পারাপারের অপেক্ষায় গোয়ালন্দ মোড়ে তিন শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক থামিয়ে রাখা হয়েছে। এ নৌপথে ছোট ৭টি এবং বড় ১৫টি লঞ্চ চলাচল করছে। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঝুঁকি এড়াতে অনেকেই লঞ্চে না গিয়ে ফেরিতে উঠছেন।

গাড়ির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় কর্তৃপক্ষ এখন যাত্রীবাহী বাস পারাপারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তবু বাসগুলোর ফেরি পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আর পণ্যবাহী ট্রাকগুলোর অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। অনেকে ২৪ ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করলেও ফেরিতে উঠতে পারছে না।

বরিশাল থেকে পণ্যবোঝাই ট্রাক (ঢাকা মেট্রো ন-১৫-৪২৮২) নিয়ে এসেছেন চালক মো. নুর আলম। তিনি বলেন, দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছান ২৪ ঘণ্টার বেশি আগে। এখনো ফেরির দেখা পাননি। সামনে যত লম্বা সারি, তাতে কখন ফেরিতে উঠতে পারবেন তার নিশ্চয়তা নেই।

কর্তৃপক্ষ বলছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তারা যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানোর দিকে নজর দিচ্ছে। এ কারণেই যাত্রীবাসী বাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তবে বেশি সমস্যা বাধছে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট নদীভাঙনের কবলে পড়ার কারণে। এখন প্রায় সব যানবাহনই দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ দিয়ে পারাপারের চেষ্টা করছে।

দৌলতদিয়া ঘাটে দায়িত্ব পালনকারী রাজবাড়ী ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) তারক চন্দ্র পাল বলেন, তাঁরা ফেরিঘাটকে যানজটমুক্ত রাখতে অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।