গোসলে গিয়ে নিখোঁজ মেয়েটির গলাকাটা লাশ পাওয়া গেল

নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় গোসল করার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছিল ১২ বছরের মেয়েটি। নিখোঁজের পরদিন আজ শুক্রবার বাড়ির পাশের কলাখেত থেকে মেয়েটির গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আজ সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের খামার শিমুলিয়া গ্রাম থেকে মেয়েটির লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে কারা তাকে হত্যা করতে পারে, এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারছে না তার পরিবার।

নিহত মেয়েটির নাম ঝুমা আক্তার (১২)। সে শিমুলিয়া গ্রামের কাঠমিস্ত্রি মুকুল মিয়ার মেয়ে। স্থানীয় শিমুলিয়া মৃধাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর আর পড়েনি ঝুমা।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে গোসল করার জন্য বালতি ও সাবান নিয়ে স্থানীয় মসজিদসংলগ্ন টিউবওয়েলে যায় ঝুমা। এরপর সে আর বাড়িতে ফেরেনি। সারা রাত ধরে বিভিন্ন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। আজ সকালে স্থানীয় লোকজন বাড়ির পাশে মসজিদসংলগ্ন একটি কলাখেতের ভেতরে তার গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এরপরই পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি পুলিশকে জানান। পরে ১০টার দিকে শিবপুর থানার পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।

এদিকে এ ঘটনায় আজ দুপুরে আবু কালাম (৫৫), মো. আবদুল্লাহ (৩২), মো. রাকিব (৩০) ও জুয়েল মিয়া (৩১) নামের চার সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। তাঁরা চারজনই ওই মসজিদসংলগ্ন নবনির্মিত একটি মাদ্রাসায় রাজমিস্ত্রি ও কাঠমিস্ত্রি হিসেবে কাজ করছিলেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মোক্তার হোসেন বলেন, ‘গতকাল বিকেলে গোসল করতে যাওয়ার পর থেকেই মেয়েটিকে পাওয়া যাচ্ছিল না। আজ সকালে একটি ছোট ছেলে ওই কলাখেতের ভেতরে তার লাশ দেখতে পেয়ে আমাকে জানায়। পরে আমি পুলিশে খবর দিই।’

নিহত ঝুমার বড় ভাই মো. রাশিদুল বলেন, ‘আমাদের বাড়ির টিউবওয়েলটি বেশ কিছুদিন ধরে নষ্ট হওয়ায় সবাই ওই মসজিদের টিউবওয়েলে গিয়ে গোসল করতাম। গতকালও বেলা তিনটার দিকে ঝুমা সেখানে গোসল করতে যায়। পরে সে আর না ফেরায় আমরা ভেবেছিলাম পার্শ্ববর্তী লাখপুর এলাকায় আমাদের অন্য বাড়িতে হয়তো গেছে। জানি না কেন ওকে এভাবে হত্যা করা হলো!’

শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মেয়েটিকে ওড়না দিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যার পর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য তার গলা কেটে দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় চার ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যার ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।