পর্বতারোহী রেশমা চিরনিদ্রায় শায়িত

রেশমা নাহার। ছবি: সংগৃহীত
রেশমা নাহার। ছবি: সংগৃহীত

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত পর্বতারোহী রেশমা নাহারকে গ্রামের বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়ায় দাফন করা হয়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। 

গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে সাইকেল চালানোর সময় ঢাকার সংসদ ভবন এলাকায় মাইক্রোবাসের চাপায় তিনি নিহত হন। গতকাল রাতেই তাঁর লাশ লোহাগড়ায় কাশিপুর ইউনিয়নের ধোপাদহ গ্রামে নিজ বাড়িতে আনা হয়।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রেশমার বাবা শেখ আফজাল হোসেন (৮১) সেনাবাহিনীর অনারারি ক্যাপ্টেন অবস্থায় ১৯৮৯ সালে অবসারে যান। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বের জন্য তিনি বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত। মা রাবেয়া বেগম ২০১৩ সালে হৃদ্‌রোগে মারা যান। রেশমা তিন ভাই আর চার বোনের মধ্যে সবার ছোট। রেশমা ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। থাকতেন মিরপুর।

এ প্রতিবেদকের আজ সকালে কথা হয় তাঁর তিন বোনের সঙ্গে। তাঁরা বলছিলেন, রেশমা ছোটবেলা থেকেই ছিলেন স্বপ্নচারী, উদ্যমী ও কর্মচঞ্চল। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা ও সংস্কৃতিচর্চায় বেশ আগ্রহ। বাড়ির পাশের নবগঙ্গা নদী পাড়ি দেওয়া, গাছে ওঠা এমন নানা কর্মচাঞ্চল্যে কেটেছে তাঁর ছোটবেলা। পাহাড়, গান, আবৃত্তি, সাইকেল—এগুলো ছিল তাঁর ভীষণ পছন্দ। একটি গানের অ্যালবাম বের হওয়ার পথে ছিল। সুন্দর গিটার বাজাতে পারতেন। আবৃত্তিতেও ছিলেন সেরা। শিশুদের প্রতি ছিল তাঁর অন্য রকম আকর্ষণ। তাই বেছে নেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারও স্বপ্ন পেয়ে বসেছিল তাঁকে।


বাংলাদেশের কেওক্রাডংয়ে ওঠার মাধ্যমে রেশমা পর্বত অভিযান শুরু করেন। আশপাশের দেশে পর্বত পাড়ি দিয়েছেন। ভারতে নেহেরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিংয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। এভারেস্টের চূড়ায় ওঠার স্বপ্ন দেখছিলেন। সে জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।


তিন বোন বলছিলেন, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে এত আন্দোলন, এত দাবি-দাওয়া, অথচ তার কোনো কার্যকারিতা নেই। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে একের পর এক দুর্ঘটনায় কেউ অকালে ঝরত না।

আড়ও পড়ুন: