আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুর ছায়াসঙ্গী বঙ্গমাতার অবদান বাঙালির সব সংগ্রামে: তথ্যমন্ত্রী

রাজধানীতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে কৃষক লীগ। সভা শেষে বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সব সদস্য, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় দোয়া করা হয়। বিজ্ঞপ্তি
রাজধানীতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে কৃষক লীগ। সভা শেষে বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সব সদস্য, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় দোয়া করা হয়। বিজ্ঞপ্তি

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব আমৃত্যু বঙ্গবন্ধুকে ছায়ার মতো অনুসরণ করেছেন, সেরা পরামর্শ দিয়েছেন। বাঙালির সব সংগ্রাম ও সফলতায় তাঁর অবদান মিশে আছে।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতির পিতার সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কৃষক লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বক্তব্যের শুরুতেই জন্মদিন উপলক্ষে বঙ্গমাতাকে ও একই সঙ্গে শোকের মাস আগস্টে নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজ এমন এক মহীয়সী নারীর জন্মদিন, যিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী নন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জননী নন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জাতির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের বাঁকে বাঁকে নীরবে-নিভৃতে প্রচারবিমুখ হয়ে তিনি অবদান রেখেছেন। জাতিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সন্ধিক্ষণে পৌঁছে স্বাধীনতা অর্জনে তাঁর ভূমিকা কোনো দিন জনসম্মুখে প্রকাশ করেননি, তাঁরই জন্মদিন আজ।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাঙালির স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার দীর্ঘ সংগ্রামে, দুর্যোগে অনেক নেতা অনেক সময় ভোল পাল্টেছে, পিছু হটেছে, ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, ঠিক পরামর্শ দিতে ব্যর্থ হয়েছে, আর সেই সময় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সবচেয়ে ভালো পরামর্শ নিয়ে বঙ্গবন্ধুর পাশে হাজির হয়েছেন। বাঙালি ও বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস যেমন একে অপরের কথা ছাড়া লেখা যায় না, তেমনি বাঙালির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা লিখতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কথা অবিচ্ছেদ্যভাবেই এসে যায়।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গমাতার মতো একজন অসমসাহসী, ধৈর্যশীল, সৎ পরামর্শদাতা স্ত্রী পাশে থাকার কারণেই বঙ্গবন্ধুর পক্ষে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে, বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জাতির জন্য লড়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে বলে আমার ধারণা। জাতির জন্য উৎসর্গীকৃত জীবনে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে একনাগাড়ে সংসারধর্ম পালন করা হয়ে ওঠেনি। বঙ্গবন্ধু কারাগারে থাকার সময়গুলোতে বঙ্গমাতাই পরম যত্ন ও বিচক্ষণতায় সংসার ও দল উভয়ই আগলে রেখেছেন।’

জাতির ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালে যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, তখন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৪ শতাংশ, যা আবার অর্জন করতে ৪০ বছর লেগেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা অর্জিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর কৃষিনীতিতে ১৯৭৫ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে ১০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য অতিরিক্ত ছিল। অর্থাৎ, বঙ্গবন্ধুকে তখনই হত্যা করা হয়, যখন তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে সফলভাবে পুনর্গঠন করছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলে দেশ আজ উন্নয়নে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে যেত।’

বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্ন পূরণ করে যেতে পারেননি, কিন্তু তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা, যাঁর কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর কণ্ঠের প্রতিধ্বনি, তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে, উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ জানান, গত ১১ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হার বিশ্বে সর্বোচ্চ। এবং নানা বিশেষজ্ঞের শঙ্কা-আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করে করোনা মোকাবিলায় গত পাঁচ মাসে একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুহারও বিশ্বে অন্যতম সর্বনিম্ন।

বিএনপি নেতাদের মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে ঘরে বসে টিভি আর অনলাইনে উঁকি দিয়ে সমালোচনা বাদ দিয়ে আর ‘ভুল ধরা পার্টি’র লোকের মতো টক শোতে টিভির পর্দা ফাটিয়ে ফেলা পরিহার করে সবার সঙ্গে দেশ গড়ায় অংশ নিতে আহ্বান জানান হাছান মাহমুদ।

কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাংসদ উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।

সভা শেষে বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সব সদস্য এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় সবাই দোয়ায় যোগ দেন। বিজ্ঞপ্তি