গায়ে ভেজা কাঁথা জড়িয়েও বাঁচতে পারলেন না তিনি

স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভায়। ছবি: প্রথম আলো
স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নেভায়। ছবি: প্রথম আলো

ঘরে আগুন দেখে দ্রুত বের হয়ে যায় ১৪ বছরের কিশোর। কিন্তু ঘরে যে বৃদ্ধ দাদি রয়েছেন, সেই মুহূর্তে তার মনে ছিল না। বৃদ্ধ জাহানারা বেগম বের হতে না পেরে কাঁথা পেচিয়ে ঘরের ভেতর দরজার কাছে টয়লেটে আশ্রয় নেন। কাথা ভিজিয়েও নেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সেখানেই তিনি পুড়ে মারা যান।

আজ রোববার দুপুরে রাজশাহীর বাগমারায় কাচারীকোয়ালীপাড়া গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। তবে স্থানীয় ফায়ার স্টেশন থেকে বলা হয়েছে, চুলার আগুন থেকে তা গোটা বাড়ি ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সদস্যদের দেওয়া তথ্যমতে, আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গ্রামের আবদুল হান্নানের বাড়িতে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। তখন শুধু বাড়িতে দাদি–নাতি ছিলেন। ছেলে–ছেলেবউ বাড়ির বাইরে ছিলেন। মুহূর্তেই আগুন গোটা বাড়ি ছড়িয়ে পড়ে। নাতি ঘর থেকে বের হতে পারলেও দাদি বের হতে পারেননি। এলাকার লোকজন ও স্থানীয় ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আগুন নেভান। ততক্ষণে ইটের তৈরি একচালা ঘরের ছাদ ও মালামাল পুড়ে গেছে। পরে টয়লেট থেকে বের করা হয় জাহানারর পোড়া লাশ। তাঁর গায়ে তখন কাঁথা জড়ানো ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আগুনে পুড়ে গোটা পরিবারটি নিঃস্ব হয়েছে। বৃদ্ধের গায়ে থাকা পুড়ে যাওয়া কাঁথাটি দেখে ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো ভেজা কাথা জড়িয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। তবে তিনি বের হতে পারেননি।

বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। পরিবারের অন্য সদস্যরা ঘর থেকে বের হতে পারলেও বৃদ্ধ পারেননি। তিনি টয়লেটে আশ্রয় নেওয়ায় পুড়ে মারা গেছেন।
তবে বাগমারায় ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ ফায়ারম্যান হায়দার আলী বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, চুলার আগুন থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। চুলার পাশে পাঠখড়ি ছিল, সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত।