বৃষ্টি বাড়বে, তবে বন্যার আর আশঙ্কা নেই

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হঠাৎ করে বৃষ্টি বেড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সারা দিনে শুধু কক্সবাজারের কুতুবদিয়াতেই ১৩১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বেশির ভাগ এলাকাতেও গতকাল দিনভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। দেশের উজানে ভারতের আসামেও বৃষ্টি বেড়ে গেছে। তবে এই বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, এখন যেভাবে দেশের দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে, তা আগামী দুই–তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে। ১৪ আগস্ট থেকে বৃষ্টি বাড়তে পারে, যা আরও তিন দিন অব্যাহত থাকতে পারে।

সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, এই বৃষ্টি থেকে বন্যার আশঙ্কা নেই, কারণ উপকূলীয় অঞ্চলে হওয়া বৃষ্টি খুব দ্রুত নদীগুলো দিয়ে বঙ্গোপসাগরে চলে যায়। আগামী কয়েক দিনে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় পানি কিছুটা বাড়লেও তা উত্তরাঞ্চলকে বন্যাকবলিত করার আশঙ্কা নেই। দেশের উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত বন্যার পানি যেভাবে নামছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। যমুনা ও মেঘনা নদী থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়া অব্যাহত থাকবে। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে সব কটি নদী থেকে বন্যার পানি কমে বিপৎসীমার নিচে চলে আসবে।

জানতে চাইলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, মৌসুমি বায়ু শক্তিশালী হয়ে ওঠায় বৃষ্টিপাত বেড়ে গেছে। তবে এই বৃষ্টিতে বন্যার আশঙ্কা নেই। পানি যে হারে নামছে, তা অব্যাহত থাকবে। এ সময় পদ্মার ভাঙন বেড়ে যেতে পারে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানি দ্রুত নামতে থাকায় শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুরে পদ্মার ভাঙন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তীব্র ভাঙনের আশঙ্কায় এসব এলাকায় নদীর পাড়ে জিও ব্যাগ, সিসি ব্লক ফেলাসহ নানা প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব এলাকার মাঠপর্যায়ের কর্মীদের সার্বক্ষণিক কাজ তদারকির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বন্যার পর অবকাঠামো মেরামত ও পুনর্বাসনের প্রতিটি কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা বাড়িঘর মেরামতের কাজ করছি। পানি উন্নয়ন বোর্ড বাঁধ ও গ্রামীণ সড়ক মেরামতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ কাজ করছে।’

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গতকাল দেশে বৃষ্টি হয়েছে কুতুবদিয়ায় ১৩২ মিলিমিটার। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুরে ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, দেশের বেশির ভাগ জেলা থেকে বন্যার পানি নেমে গেলেও এখনো প্রায় ৯ লাখ পরিবার বিভিন্ন উঁচু স্থান, সড়ক এবং বাঁধে অবস্থান করছে। এসব পরিবারের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা মেরামত করার আগে তারা বাড়িতে উঠতে পারছে না। বিশেষ করে আমন ধানের বীজতলা এবং গ্রামীণ সড়কগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।