নগরেও বেহাল সড়ক, গাড়ি চলে এঁকেবেঁকে

খানাখন্দের কারণে সড়কে গাড়ি চালানোই মুশকিল। ৯ আগস্ট খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে। ছবি: প্রথম আলো
খানাখন্দের কারণে সড়কে গাড়ি চালানোই মুশকিল। ৯ আগস্ট খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে। ছবি: প্রথম আলো

খুলনা নগরের সোনাডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে নতুন রাস্তা পর্যন্ত মুজগুন্নী মহাসড়ক দিয়ে প্রচুর যানবাহন চলাচল করে। সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় পিচ-খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় খানাখন্দের। এবড়োখেবড়ো সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আর চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে যাত্রীরা। বৃষ্টি হলে সেই দুর্ভোগ অনেক বেড়ে যায়।

৯ আগস্ট সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট-বড় গর্ত এড়িয়ে যানবাহন চলছে এঁকেবেঁকে। ছোট-বড় গর্তে অনেক জায়গায় পানি জমে আছে। আবার অনেক জায়গায় গাড়ি চলার সময় ভাঙা ইটের গুঁড়ায় আশপাশ ধুলাময় হয়ে যাচ্ছে।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিপরীতে অনেক বড় একটি গর্তের সামনে স্থানীয় একজন ফেসবুক লাইভে সমস্যার কথাটি তুলে ধরছিলেন। সেখানে থাকা লোকজন বলেন, অ্যাম্বুলেন্স, শত শত ইজিবাইক এবং ঢাকাগামী পরিবহন এই সড়ক দিয়ে যাওয়া-আসা করে। এখন সড়কে বিপজ্জনক অবস্থা। কিছু না হলেও আপাতত কিছু ইট দিয়ে বড় গর্তগুলো মেরামত করা উচিত। না হলে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে। সড়কের বন্য প্রাণী উদ্ধার ও পুনর্বাসন কেন্দ্র, পূজাখোলা মোড়, বয়রা চিলড্রেন ভয়েস স্কুলের সামনে ও বয়রা মোড়ে রাস্তার অবস্থা চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।

বয়রা মোড়ে বড় বড় গর্তে সম্প্রতি ইট ফেলা হয়। নগরের বয়রা এলাকায় খুলনা পাবলিক কলেজের চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পলাশ উদ্দীন খলিফা বলেন, বয়রা আট রাস্তা মোড়ের ওপর ৮ ফুট চওড়া, ১২ ফুট দৈর্ঘ্যের এবং ১ ফুট গভীরতার একটা বড় গর্ত দীর্ঘদিন ধরে ছিল। ব্যস্ততম এই এলাকায় গর্তটি মরণফাঁদ হয়ে উঠেছিল। বিষয়টি নিয়ে ৭ আগস্ট ফেসবুকে লেখার পরদিন এলাকার লোকজন অস্থায়ীভাবে ইট ফেলে মেরামত করেছেন। আশপাশের আরও বড় কিছু গর্তও মেরামত করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনকে এসব বিষয়ে আরও মনোযোগী হওয়া দরকার।

সড়কের আশপাশের এলাকার ১২ জন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোনাডাঙা বাসস্ট্যান্ড থেকে নতুন রাস্তা পর্যন্ত সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। নগরের যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রয়েছে, এর মধ্যে এটি অন্যতম। এ সড়কের পাশেই খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল, ভারতীয় ভিসা কেন্দ্র, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়, বন বিভাগের অফিস, দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিশেষায়িত শেখ আবু নাসের হাসপাতাল, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সেক্টর সদর দপ্তর, বিএনএন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, এ্যাংকরেজ স্কুল, নাবিক কলোনি, পুলিশ লাইনস, মুজগুন্নী শিশুপার্ক, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কর অঞ্চল খুলনা, নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্রসহ সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়া খালিশপুর, দৌলতপুরসহ নগরের পশ্চিম অংশের বেশির ভাগ মানুষ নগরে প্রবেশের ক্ষেত্রেও সড়কটি ব্যবহার করে।

খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. লিয়াকত আলী খান প্রথম আলোকে বলেন, ওই সড়ক ও ড্রেনেজ সিস্টেমের জন্য আলাদা আলাদা প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার মতো বরাদ্দ আছে। ড্রেনেজ প্রকল্পের জন্য পরামর্শক নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা নকশা দিলে দরপত্র আহ্বান করা হবে। ড্রেনেজ প্রকল্পের দরপত্র হয়ে গেলে রাস্তার দরপত্র আহ্বান করা হবে। সব মিলিয়ে বেশ কিছুটা সময়ের দরকার।