কল্যাণ কেন্দ্রে ঠাঁই হলো না, পরিত্যক্ত ঘরে সন্তান প্রসব

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

প্রসববেদনা ওঠার পরপরই জেমি আক্তারকে (২৫) নেওয়া হয় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে। কিন্তু সেখানে তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় জেমিকে নেওয়া হচ্ছিল অন্য হাসপাতালে। পথে অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তাঁকে নেওয়া হয় একটি পরিত্যক্ত ঘরে। সেখানে সন্তান প্রসব করেন তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা শহরে। জেমি আক্তারের বাড়ি জেলার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া গ্রামে।

স্বজনদের ভাষ্য, গতকাল রাতে প্রসববেদনা ওঠে অন্তঃসত্ত্বা জেমির। এ অবস্থায় তাঁকে নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে রওনা হন স্বজনেরা। নেওয়া হয় গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে। জেলা শহরের ওই প্রতিষ্ঠানে পৌঁছান রাত ১২টার দিকে। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সেলিনা বেগম। কিন্তু তিনি কোনো পরীক্ষা ছাড়াই জেমিকে অন্যত্র নিয়ে যেতে বলেন। পরিবারের পক্ষ থেকে ভর্তির জন্য একাধিকবার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু নানা কথা শুনিয়ে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা সেলিনা বেগম। তিনি দাবি করেন, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ভয়ে ওই প্রসূতিকে ভর্তি করা হয়নি। পরে তাঁকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হয়।

গর্ভবতী নারীদের স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের একমাত্র ভরসাস্থল গাইবান্ধা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে এর আগেও এমন নির্দয় আচরণের অভিযোগ রয়েছে। গত ৬ এপ্রিল গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মিষ্টি আক্তার নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর প্রসববেদনা ওঠে। তাঁকে ওই কেন্দ্রে ভর্তি না নিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন স্বজনেরা। পরে কেন্দ্রের কয়েক শ গজ দূরে অটোরিকশার ভেতরে সন্তান প্রসব করেন মিষ্টি আক্তার।

জেমি আক্তারকে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ভর্তি করতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েন স্বজনেরা। তাঁরা জেমিকে নিয়ে রওনা হন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের উদ্দেশে। কিন্তু পথে তাঁর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। এ অবস্থায় শহরের ডিবি রোডের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নেওয়া হয় তাঁকে। সেখানে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন জেমি। পরে মা ও নবজাতককে এলাকাবাসী ও পুলিশের সহযোগিতায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে মা ও নবজাতক দুজনেই সুস্থ আছেন। তাদের এক গাইনি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।