ক্রসফায়ার পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের ঠান্ডা মাথার সিদ্ধান্ত কি না, প্রশ্ন বিএনপির

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফাইল ছবি

পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় বিএনপির প্রশ্ন, ক্রসফায়ারে হত্যাকাণ্ড ঘটানো বা না ঘটানো পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ঠান্ডা মাথার সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত কি না। দলটি বলছে, তারা এত দিন ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ জানিয়ে আসছে, তা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘মেজর (অব.) সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছে যে পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। তাই যদি হয়, তাহলে আমরা বলতে চাই, ক্রসফায়ারে হত্যাকাণ্ড ঘটানো বা না ঘটানো পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ঠান্ডা মাথার সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত কি না। এত দিন বিএনপির পক্ষ থেকে এটাই বলে আসা হয়েছে। আমরা বারবার বলেছি, ক্রসফায়ারে সাজানো গল্প মিথ্যা, বানোয়াট, এটা সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকার নীলনকশার অংশ। সিনহা হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আমাদের এত দিনের দাবি-অভিযোগ সত্য বলে প্রমাণিত হলো।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্তমান সরকারের অধীনে দেশে প্রায় ৩ হাজার মানুষ পুলিশ, র‍্যাব ও ডিবির হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ২০২০ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত ১৩৪ জন মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। এঁদের অধিকাংশই বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী।

মেজর (অব.) সিনহা হত্যার ঘটনায় পরিবার মামলা করতে পেরেছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, অনেক পরিবারের সদস্যরা মামলা করতেও সাহস পান না। সিনহা হত্যাসহ সব বিনা বিচারে হত্যার বিচার একদিন হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিনা বিচারে খুন-গুম কখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যায় না। সংবিধান এটাকে সমর্থন করে না। এটা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবেও গণ্য হতে পারে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন আইনের ঊর্ধ্বে। মানুষের অধিকার রক্ষার আন্দোলন দমন করা হয়েছে বন্দুকের মুখে। রাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানও নেই যে কাজ করছে। কারণ এই সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই।

করোনার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিন বন্ধ করার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রতিদিন যে তথ্য দেওয়া হয়, তা মানুষ বিশ্বাস করে না।

পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে প্রবৃদ্ধি বাড়ার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটা একটা হাস্যকর বিষয়। তারা বলেছে, সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। যেখানে তিন মাস গাড়িই চলল না, সেখানে কোন দিক দিয়ে বাড়ল। রপ্তানি, উৎপাদন খাতে নাকি প্রবৃদ্ধি বাড়ছে। অর্থনীতিবিদদের যে মন্তব্য এসেছে, তাতে এ সরকারের তো লজ্জা-শরম বলতে কিছু নেই। দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত ছিল।’

স্বাস্থ্য খাতে কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত মোতাজজেরুল ইসলাম ওরফে মিঠু প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা আমাদের লুট করবে, তারা বিদেশে চলে যাবে। সাধারণ মানুষ দেশের উন্নয়নের জন্য ক্রসফায়ারে মারা যাবে।’