জমি নিয়ে বিরোধে প্রাণ হারিয়েছে স্কুলছাত্র আরিফ: পিবিআই

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার স্কুলছাত্র আরিফ হোসেনকে নৃশংসভাবে হত্যার দেড় বছরের মাথায় এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করা হয়েছে। জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যার আলামত ধ্বংস করতেই হত্যার পর তার লাশ পুড়িয়ে দিয়েছিলেন হত্যাকারীরা। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার আরিফ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত মঙ্গলবার স্কুলছাত্র আরিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পিবিআই মিজানুর রহমান (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। ওই দিনই হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন মিজানুর। মিজানুর রহমানের বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার রুস্তমপুর ভারতীপাড়ায়। মিজানুর একজন ভ্যানচালক। মিজানুর আরিফের ফুফাতো ভাই। রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল মাহমুদ অভিযুক্ত মিজানুরের জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন বলে জানিয়েছেন আবদুল মান্নান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় উপজেলার রুস্তমপুর বাজারে গিয়ে আরিফ নিখোঁজ হয়। পরদিন দুপুরে ওই গ্রামের একটি খাল থেকে আরিফের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। হত্যার আলামত নষ্ট করার জন্য আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল আরিফের লাশ। আরিফ ওই উপজেলার রুস্তমপুর ভারতীপাড়া গ্রামের মহির উদ্দীনের ছেলে। সে পাশের চারঘাট উপজেলার পান্নাপাড়া ভোকেশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ ঘটনায় ১৩ ডিসেম্বর আরিফের মা আছিয়া বেগম থানায় অজ্ঞাতপরিচয় বেশ কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

আজ সকালে এ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের রাজশাহী কার্যালয়ের পরিদর্শক আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা দেড় মাস পর এই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান। অনেক তদন্তের পর গত মঙ্গলবার মিজানুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর মিজানুর এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, স্কুলছাত্র আরিফের সঙ্গে তার চাচা মো. কুদ্দুসের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। মিজানুর আরিফের চাচার পক্ষে গিয়ে জমিসংক্রান্ত কারণে আরিফকে হত্যা করেন। কুদ্দুস ছাড়াও হত্যাকাণ্ডের সময় মিলন ও মজনু নামে আরও দুজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। প্রথমে শ্বাসরোধ করে আরিফকে হত্যা করা হয়। তারপর আলামত ধ্বংসের জন্য তাঁর লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়।