'এখানে-ওখানে আগুন' - পরিদর্শনে বাপেক্স কর্মকর্তারা

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সালমারা গ্রামে একটি নলকূপ পরীক্ষা করছেন বাপেক্স কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে। ছবি: প্রথম আলো
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সালমারা গ্রামে একটি নলকূপ পরীক্ষা করছেন বাপেক্স কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে। ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সালমারা গ্রামে হঠাৎ করে এখানে–ওখানে আগুন জ্বলে ওঠার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স) দুজন প্রতিনিধি। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁরা ওই গ্রামে গিয়ে বিভিন্ন আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সালমারা গ্রামের ৬টি পরিবার ২২ দিন ধরে আগুনের আতঙ্কে আছেন। হঠাৎ করেই আগুন জ্বলে ওঠে। কাপড়চোপড়, খড়ের স্তূপ, ঘরের ভেতরের আসবাবে আগুন ধরে যায়। তাই বাড়ির উঠানে, ঘরের বারান্দায় ড্রাম, বালতির মধ্যে পানি রাখা। লোকজন রয়েছেন পাহারায়। যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে আগুন লাগতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নেভাতে এই প্রস্তুতি।

ঘটনা শুরুর পর ভুক্তভোগী লোকজন বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানান। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনা সম্পর্কে জানতে-বুঝতে এক রাত ওই গ্রামে অবস্থান করেছেন। তাঁদের সামনেও একবার আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এরপর একাধিকবার গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু কীভাবে এই আগুনের ঘটনা ঘটছে, তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না।

বিষয়টি নিয়ে গত মঙ্গলবার প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে ‘হঠাৎ এখানে-ওখানে জ্বলে ওঠে আগুন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। একই দিন ফায়ার সার্ভিস বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্টেশনের পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সমীর বিশ্বাস বিষয়টি নিয়ে বাপেক্স কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

এরপর বৃহস্পতিবার বাপেক্সের ভূতত্ত্ব বিভাগের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ও উপব্যবস্থাপক মো হামিদুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। তাঁরা যেসব স্থান বা জিনিসপত্রে আগুন লেগেছে, সেগুলো পরীক্ষা করেন। একই সময় তিনটি নলকূপও পরীক্ষা করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তবে এ বিষয়ে বাপেক্স কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। এ সময় ইউএনও সমীর বিশ্বাস ছাড়াও বিশ্বম্ভরপুর ফায়ার স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিমাংশু রঞ্জন সিংহ, স্থানীয় ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রণজিৎ চৌধুরী সেখানে ছিলেন।

গ্রামের বাসিন্দা রূপক দে জানান, তাঁরা এ ঘটনায় আতঙ্কে আছেন। পরিবারের নারী-শিশুদের মধ্যে ভয়টা বেশি। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বাপেক্সের লোকজনও তাঁদের সতর্ক থাকতে বলেছেন।

সমীর বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁদের ধারণা ছিল, ভূগর্ভে থাকা কোনো প্রকার গ্যাসের প্রতিক্রিয়ায় এমনটি হতে পারে। কিন্তু বাপেক্সের কর্মকর্তারা তাঁকে জানিয়েছেন, এখানে এ কারণে এই ঘটনা ঘটছে না। তাঁরা পরীক্ষা করে সেটি পাননি। তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের বিষয়ে তাঁরা তাঁদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একটি প্রতিবেদন দেবেন।