স্কুলছাত্রী গণধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন, দুজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড

বরগুনায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে খুনের ভয় দেখিয়ে গণধর্ষণ করে সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় তিন আসামিকে সাজার রায় দিয়েছেন আদালত। তাঁদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক এক আসামিকে যাবজ্জীবন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক (নাবালক) দুজনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম আল আমিন (৩০)। তিনি বরগুনার তালতলী উপজেলা শহরের বাসিন্দা বারেকের ছেলে। ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুজনের (দুজনের বয়সই ১৭ বছর) বাড়িও একই এলাকায়। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপ্রাপ্তবয়স্ক একজন মামলার শুরু থেকেই পলাতক।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ওই স্কুলছাত্রীর মা উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক। ২০১৭ সালে ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি তাঁর দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে তালতলীতে বাসায় রেখে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষার খাতা আনতে যান। ওই দিন তাঁর মেয়ে পাশের বাড়ির এক মেয়েকে নিয়ে রাতে ঘুমায়। রাত ১২টার দিকে প্রতিবেশী মেয়েটির দাদি অসুস্থ হলে সে তার বাড়ি চলে যায়। এর মধ্যেই আসামিরা বাদীর বাড়িতে ঢুকে স্কুলছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

এ ঘটনায় ওই বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি তালতলী থানায় ধর্ষণ মামলা করেন স্কুলছাত্রীর মা। তালতলী থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজী ফজলুল হক তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১২ জুন তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আসামি আল আমিন ও অপ্রাপ্তবয়স্ক অপর আসামি প্রায় দুই বছর আগে থেকে জেলহাজতে আছেন। আরেকজন শুরু থেকে পলাতক।

অপ্রাপ্তবয়স্ক এক আসামির বাবা বলেন, তাঁর ছেলে নির্দোষ। তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে কোনো সাক্ষী সাক্ষ্য দেয়নি। তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

বরগুনা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল রায়ের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুই আসামি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের ১০ বছরের বেশি সাজা দেওয়ার বিধান নেই।