গাইবান্ধায় বন্যায় ভেসে গেছে ৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকার মাছ

এবারের তিন দফা বন্যায় গাইবান্ধার ৭ উপজেলার ৯৪৩টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ৬৭৭ জন মৎস্যচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এ কারণে মাছচাষিরা পুঁজি হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।

গাইবান্ধা জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানায়, তিন দফা বন্যায় গাইবান্ধার ৭ উপজেলার ছোট–বড় ৯৪৩টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে ৬৭৭ জন মাছচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৪ কোটি ১০ লাখ টাকার বড় মাছ ও ১২ লাখ টাকার পোনা মাছ ভেসে গেছে। এ ছাড়া পুকুরের অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ ১৭ লাখ টাকা।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার মাছচাষিরা। বন্যায় ফুলছড়ি উপজেলার ৩১৬টি পুকুর, সাঘাটায় ২০০টি পুকুর, সুন্দরগঞ্জে ১৯৫টি, গোবিন্দগঞ্জে ১৩০টি, সাদুল্লাপুরে ৫৫টি,সদর উপজেলায় ৪২ ও পলাশবাড়ী উপজেলায় মাত্র ৫টি পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে যায়।

ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া এলাকার মাছচাষি বাদল চন্দ্র দাস বলেন, ‘ঋণ নিয়ে এবার দেড় একর আয়তনের পুকুরে মাছ চাষ করেছিলাম। কিন্তু বন্যার পানিতে পুকুরের সব মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় পৌনে ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।’


একই উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়া গ্রামের মাছচাষি খলিলুর রহমান জানান, হঠাৎ করে পানি এসে পুকুরের পাড় ভেঙে গিয়ে তাঁর পুকুরের প্রায় ৪ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। পুনরায় মাছ চাষের জন্য সরকারি সহায়তা না দিলে পথে বসে যাওয়া ছাড়া তাঁর আর কোনো উপায় নেই।

বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ার বিষয়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী গ্রামের মাছচাষি টিপু মিয়া জানান, পুকুরের পাড়ে জাল দিয়ে বেড়া দিলেও মাছ আটকানো সম্ভব হয়নি। প্রায় ছয় লাখ টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে মৎস্য বিভাগের কাছে স্বল্প সুদে ঋণসহায়তা ও বিনা মূল্যে মাছের পোনা সরবরাহের উদ্যোগ গ্রহণের পদক্ষেপের দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে গাইবান্ধা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুদ দাইয়ান জানান, মাছচাষিদের ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষিদের সহায়তা করা হবে।