তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় ১০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে গেছে পুলিশ

যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে সাইফুল ইসলাম নামের এই কিশোরকে আহত অবস্থায় আজ যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: প্রথম আলো
যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে সাইফুল ইসলাম নামের এই কিশোরকে আহত অবস্থায় আজ যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ছবি: প্রথম আলো

যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) তিন কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়কসহ ১০ জনকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তিন কিশোরের পরিবারের লোকজন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় দিকে যশোরের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন এসব তথ্য জানিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিন কিশোর নিহত ও ১৫ জন আহত হয়। আহত ব্যক্তিদের পুলিশ হেফাজতে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নিহত তিন কিশোর হচ্ছে বগুড়ার শিবগঞ্জের তালিবপুর পূর্বপাড়ার নান্নু পরামাণিকের ছেলে নাঈম হোসেন (১৭), একই জেলার শেরপুর উপজেলার মহিপুর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে রাসেল ওরফে সুজন (১৭) এবং খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা পশ্চিম সেনপাড়ার রোকা মিয়ার ছেলে পারভেজ হাসান রাব্বি (১৭)।

পুলিশি হেফাজতে যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের কয়েকজন কিশোর অভিযোগ করে বলে, গতকাল কেন্দ্রে কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও আনসার সদস্যদের বেধড়ক মারধরে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে হতাহত হওয়ার এ ঘটনা ঘটেছে।

হাসপাতালে ভর্তি মাহিম নামের এক কিশোর অভিযোগ করে বলে, ‘স্যারেরা ডেকে নিয়ে আমাদের বেদম পিটিয়েছেন। আমরা কোনো মারামারি করিনি।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন বলেন, ‘আহত কিশোরদের কাছ থেকে আমরাও এমন তথ্য পেয়েছি। এদিকে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে কেন্দ্রের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’

নিহত কিশোরদের পরিবারের স্বজনেরা সকালে হাসপাতালের মর্গের সামনে গিয়ে আহাজারি করেন। এ সময় নিহত নাঈমের বড় ভাই শাহদাৎ হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে আমাদের কাছে কোনো খবর দেওয়া হয়নি। আমরা রাতে টেলিভিশনে খবর দেখে সকালে এসেছি। গতকাল আমার ভাই নাঈম আমাদের সাথে মুঠোফোনে শেষ কথা বলেছে।’

এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক অসীত সাহা বলেন, ‘কেন্দ্রের নিবাসী অনেক কিশোরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিন্তু কেউ কর্মকর্তাদের মারধরের বিষয়ে কিছু বলেনি। এ বিষয়ে আমরাও তদন্ত করব। কিশোরদের হত্যার সঙ্গে কেন্দ্রের কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’