ভুয়া জন্মদিন পালনের জন্য জাতির কাছে বিএনপির ক্ষমা চাওয়া উচিত: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা, ১৪ আগস্ট। ছবি: পিআইডি
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা, ১৪ আগস্ট। ছবি: পিআইডি

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এত দিন ধরে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালনের জন্য জাতির কাছে বিএনপির ক্ষমা চাওয়া উচিত। আর সেই ভুয়া জন্মদিন না পালনের ঘোষণা দিয়ে বাহবা নেওয়ার চেষ্টাও অপরাধ।’

রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবে শুক্রবার দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ‘জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড: ষড়যন্ত্র দেশে-বিদেশে’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তথ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।

১৫ আগস্ট খালেদা জিয়া আর জন্মদিন পালন করবেন না বলে বিএনপির ঘোষণার বিষয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘কবে থেকে ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ হলো? পত্রিকার পাতায় আমরা জানলাম, ১৯৯৫ সালে হঠাৎ তিনি ১৫ আগস্ট জন্মগ্রহণ করলেন! এর আগেও তাঁর তিন-চারটি জন্মদিনের কথা আমরা শুনেছি। এখন তাঁরা যে এটি পালন করবেন না বলে বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করছেন, সেটিও একটি অপরাধ।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৫ আগস্ট, যেদিন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, হঠাৎ খালেদা জিয়া সেদিন জন্মগ্রহণ করেছেন ঘোষণা দিয়ে তো হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করা হলো, হত্যাকারীদের উৎসাহিত করা হলো এবং এটি সেই নির্মম হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করার শামিল। তাই আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, তারা যে হঠাৎ করে ১৫ আগস্টকে খালেদা জিয়ার জন্মদিন বলে ঘোষণা দিয়েছিল, সেটি যে মিথ্যা-বানোয়াট ছিল, সেটির জন্য জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে। তাহলে জাতি তাদের ক্ষমা করলেও করতে পারে। ভুয়া জন্মদিন পালন করবে না বলে তারা এটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে যে তারা জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড নিয়ে উপহাস করতে চায়। দয়া করে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে উপহাস করবেন না।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের আওতায় আনার জন্য আজ সাংবাদিক সমাজও দাবি জানিয়েছে। আমি আগে থেকেই এটি বলে আসছি যে শুধু এই হত্যাকাণ্ডের কুশীলবই নয়, যারা এর পটভূমি তৈরি করেছিল, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের জন্য এখনই একটি কমিশন গঠন করা উচিত। মনে রাখতে হবে, এই হত্যাকাণ্ডের পর যারা এটিকে সমর্থন করেছিল, তাদেরও দায় আছে।’

মন্ত্রী এ সময় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সব সদস্য, শহীদ জাতীয় চার নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাঁদের আত্মার শান্তিকামনা করেন।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আবদুল জলিল ভুঁইয়া, ওমর ফারুক, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শাহেদ চৌধুরী, মাইনুল আলম সেমিনারে বক্তব্য দেন।

সভাপতির বক্তৃতায় সাইফুল আলম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পেছনে যারা ছিল এবং যারা আগে ও পরে এ হত্যাকে সমর্থন করেছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করে বিচারের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি।’

জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শ্যামল দত্ত ‘জাতির পিতার হত্যাকাণ্ড: ষড়যন্ত্র দেশে-বিদেশে’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ও এর পূর্বাপর ষড়যন্ত্রের পটভূমি বর্ণনা করেন।