বিএনপি 'বিদ্রোহী' ভারাক্রান্ত স্বস্তিতে আওয়ামী লীগ

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী থাকায় স্বস্তিতে রয়েছে আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে চেয়ারম্যান পদে বিএনপির একাধিক নেতা প্রার্থী হওয়ায় ‘গৃহবিবাদের’ সৃষ্টি হয়েছে। ৩১ মার্চ এই উপজেলায় ভোট গ্রহণ হতে যাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২ মার্চ রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মৌলভীবাজার জেলা কমিটির সহসভাপতি ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মুমিত, বিএনপির উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন আহমদ, বিএনপির উপজেলা কমিটির সদস্য আছাদ উদ্দিন এবং স্বতন্ত্র হিসেবে মোস্তফা কামাল ও তাজুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির একাংশের উপজেলা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক কিশোর রায় চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর উপজেলা কমিটির আমির আবদুর রহমান, আনজুমানে আল-ইসলাহ্র উপজেলা কমিটির সভাপতি আবদুস শহীদ এবং স্বতন্ত্র হিসেবে কবির উদ্দিন, সুরমান আহমদ চৌধুরী, আবদুল আজিজ, সাহেদুল ইসলাম চৌধুরী ও রমাকান্ত গোয়ালা মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ ছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যুবলীগের উপজেলা কমিটির মহিলাবিষয়ক সম্পাদক রঞ্জিতা শর্মা, বিএনপির উপজেলা কমিটির সদস্য হোসনে আরা বেগম ও স্বতন্ত্র হিসেবে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আজিবুন খানম মনোনয়নপত্র জমা দেন। গত বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল। চেয়ারম্যান প্রার্থী তাজুল ইসলাম ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল আজিজ বুধবার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জহিরুল ইসলামের কাছে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা দেন।
দলীয় সূত্র জানায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা সদরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভায় চেয়ারম্যান পদে সমঝোতার মাধ্যমে এম এ মুমিত, ভাইস চেয়ারম্যান পদে গোপন ভোটের মাধ্যমে কিশোর রায় চৌধুরী এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সমঝোতার মাধ্যমে রঞ্জিতা শর্মাকে প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়। এর আগে ৬ ফেব্রুয়ারি বিএনপির বিশেষ সভায় নেতা-কর্মীদের মৌখিক সমর্থনে চেয়ারম্যান পদে নাসির উদ্দিন আহমদকে একক প্রার্থী করা হয়। সভায় ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোনো প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়নি। তবে সভায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াতে ইসলামীর আমির আবদুর রহমানকে সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
নাসির উদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকায় দলকে সংগঠিত করেছি। তাই তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা আমাকে একক প্রার্থী করেছেন।’ আছাদ উদ্দিন বলেন, ‘প্রাথমিক আলোচনার কথা বলে আমাকে সভায় (৬ ফেব্রুয়ারি) ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে আলোচনার কোনো পরিবেশ না থাকায় চলে আসি। পরে দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।’
আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আজির উদ্দিন বলেন, ‘তিনটি পদে আমাদের একক প্রার্থী। তাই জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।’