ঘাঘট নদের পাশ থেকে অবাধে মাটি উত্তোলন

রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার চৌধুরী হাট এলাকায় ঘাঘট নদ ও এর আশপাশের কৃষিজমি থেকে দেদারসে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে ভাঙনের হুমকির মুখে পড়েছে কৃষকদের আবাদি জমি।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের চৌধুরী হাট এলাকায় ঘাঘট নদের পাড়ে কৃষকদের জমি মাত্র দুই থেকে তিন হাজার টাকায় ইজারা নেন রংপুর শহরের হাছনা বাজার এলাকার বালু ও মাটি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম। কৃষকেরা কিছু না বুঝেই টাকা নিয়ে সাইফুলকে মাটি কাটার অনুমতি দেন। কিন্তু সাইফুল যতটুকু জমির মাটি কাটার কথা ছিল, তার চেয়ে বেশি অংশে মাটি কাটছেন। সেই সঙ্গে নদেরও মাটি কাটছেন। এরপর তিনি ওই সব মাটি ট্রাকের পর ট্রাকে ভরে অন্যত্র বিক্রি করছেন।

চৌধুরী হাট এলাকার কৃষক আলাল মিয়া বলেন, ‘দুই হাজার টাকার বিনিময়ে নদীর (নদ) উত্তর দিকের অংশ লিজ (ইজারা) দিছি মাটি ব্যবসায়িক। কিন্তু এলা দেখা যাইতোছে পুরা জমি ভাঙি যাওয়ার মতো অবস্থা হইছে।’

কৃষক আমির আলী তাঁর এক একর আবাদি জমির মধ্যে ১০ শতাংশ জমি তিন হাজার টাকায় ইজারা দেন সাইফুলকে। আমির আলী বলেন, ‘এভাবে মাটি কাটলে যে জমির ক্ষতি হইবে তা আগোত বুঝি নাই।’

কৃষক খলিলুর রহমান ও আলিফউদ্দিন বলেন, নদী পারের জমিগুলো থেকে মাটি কাটা হলে আশপাশের আবাদি জমিগুলোও নদীভাঙনের মুখে পড়বে।

২০১০ সালের বালুমহাল আইনে বলা আছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে কোনো উন্মুক্ত স্থান, চা-বাগানের ছড়া বা নদীর তলদেশ থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। যদি কেউ ওই সব স্থান থেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করে, তবে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম তা করেননি।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘নদীপারের কিছু মানুষের জমি লিজ নিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। এতে তো কোনো অনিয়ম করিনি।’ কিন্তু এভাবে মাটি কাটতে গেলেও সরকারি অনুমতির প্রয়োজন রয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব নিয়ম জানা ছিল না।’ গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুর রহমান বলেন, ঘাঘট নদের পাশ থেকে মাটি কাটার খবর তাঁর জানা নেই। খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।