বিদ্রোহী নিয়ে সংকটে আ.লীগ ও বিএনপি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলই ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী নিয়ে বিপাকে পড়েছে। সব প্রার্থীই জোরালোভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে মাঠপর্যায়ে গণসংযোগে এগিয়ে রয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। ৩১ মার্চ এখানে ভোট গ্রহণ হবে।
এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আটজন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপি-সমর্থিত মো. জাহাঙ্গীর, জাতীয় পার্টি-সমর্থিত ফিরোজ খান, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী তাজ মোহামঞ্চদ ইয়াছিন, বিএনপির বিদ্রোহী নুরে আলম ছিদ্দিকী, বর্তমান চেয়ারম্যান বশিরুল্লাহ জরু এবং স্বতন্ত্র এস এম আলম ও আশিকুল আলম।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ৬ মার্চ তৃণমূলের ভোটে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দলের একক প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়। ১১ মার্চ তৃণমূলের ভোটে বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান পদে জেলা বিএনপির সহসভাপতি হাজি মো. জাহাঙ্গীরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক তাজ মোহামঞ্চদ ইয়াছিন বলেন, দল এমন এক প্রার্থীকে নির্বাচন করেছে, যিনি দলের জন্য কোনো কাজ করেননি। দলের অনেকেই তাঁকে চেনেন না। তাই দলের সিদ্ধান্ত না মেনে তিনি নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জেলা বিএনপি থেকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপির কোনো হেভিওয়েট প্রার্থী মনোনীত না করায় দলের নেতা-কর্মীরা গা-ছাড়া ভাব নিয়ে আছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী কাউছার মোল্লাকে সমর্থন দেওয়ার জন্য দলের কয়েকজন নেতা-কর্মী বিএনপির সমর্থন চান। কিন্তু বিএনপি তাঁদের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশনের আলোচনা অনুষ্ঠানে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম ছিদ্দিকী সদর আসনের আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদের প্রশংসা করেন। এ জন্য বিএনপির নেতা-কর্মীদের ধারণা, তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গত শনিবার তাঁকে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়।
তবে নুরে আলম ছিদ্দিকী বলেন, তিনি দলের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন। তাঁর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে বলে দল তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মুফতি মোবারক উল্লাহ জানান, তাঁরা জেলা বিএনপির সভাপতি হারুন-আল-রশিদের বাসায় অনুষ্ঠিত সভায় ইসলামী ঐক্যজোটের সমর্থিত প্রার্থীকে মনোনীত করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু বিএনপি তাঁদের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি। তাই তাঁরা নিজের প্রার্থীর পক্ষেই কাজ করে যাচ্ছেন।
হারুন-আল-রশিদ জানান, আলেম-ওলামারা দেরি করে আলোচনা করতে এসেছিলেন। ততক্ষণে বিএনপির প্রার্থীকে মনোয়ন দেওয়া চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। বিএনপির বিপক্ষে আলেম-ওলামাদের অবস্থান বিএনপির প্রার্থীর ওপর প্রভাব পড়বে কি না জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রভাব ফেললেও এখন কিছুই করার নেই।