বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীদের টাকায় বিদ্যালয় মেরামত

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয় বিএনপির-সমর্থিত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীদের টাকায় মেরামত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ওই প্রার্থীদের টাকায় ক্ষতিগ্রস্ত কমলাপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামতের সময় ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি তাতে বাধা দেয়। এ ঘটনায় গত রোববার বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে।
১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে সহিংসতায় মুক্তাগাছা ও গৌরীপুর উপজেলায় তিনটি করে মোট ছয়টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত হয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার স্থগিত ওই ছয়টি কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ হবে বলে জানিয়েছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কমলাপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের টিন খুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। এরপর বিদ্যালয়টি আর মেরামত করা হয়নি। ২৩ মার্চ বিএনপি-সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জাকারিয়া হারুন ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম শাহরিয়ার নিজেদের টাকায় টিন কিনে বিদ্যালয়ের মেরামতকাজ শুরু করেন। তবে বিদ্যালয় ভবন মেরামতের আগে তাঁরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। মেরামতকাজ বেশির ভাগ হয়ে গেলে পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহজাহান সরকার মেরামতকাজে বাধা দেন। তিনি বিষয়টি স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানান। পরে ওই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়।
বিএনপি-সমর্থিত ওই দুই প্রার্থীর টাকায় বিদ্যালয়ে টিন লাগিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন—এমন অভিযোগ এনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. বিল্লাহ হোসেন সরকার ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. তারেক।
এ ব্যাপারে শাহজাহান সরকার বলেন, ‘তাঁরা (বিএনপির-সমর্থিত দুই প্রার্থী) কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে বিদ্যালয়ে টিনের বেড়া লাগিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তা বন্ধ করি।’ তবে এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কামরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নাহিদ আহসান বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফয়জুন্নেছা বেগম জানান, অভিযোগ পেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবেন।
তবে জাকারিয়া হারুন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে স্কুল মেরামত করা হয়নি। এটা আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীদের নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত।’