রোগ ভিন্ন, দাওয়াই এক

ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা সব রোগীকে একই ‘দাওয়াই’ দেওয়া হচ্ছে। রোগীদের অভিযোগ, চিকিৎসকেরা সব রোগের জন্য একই ওষুধ দেন। কোনো ব্যবস্থাপত্র দেন না। ফলে রোগীদের আবার ‘প্রাইভেট’ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হয়।
গত শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে সেবা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে এ চিত্র পাওয়া গেছে। বেলা ১১টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফটকের সামনে কথা হয় আজিদা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রায় ১৫ দিন জ্বর, সর্দি ও বুকব্যথায় ভোগার পর চিকিৎসা নিতে এসেছেন। বহির্বিভাগে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর চিকিৎসকের কাছ যান। ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ওষুধ বিতরণ কক্ষে গেলে তাঁকে কয়েকটি আয়রন ট্যাবলেট ও হিস্টাসিন দিয়ে ব্যবস্থাপত্রটি জমা রাখা হয়। তিনি বলেন, একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রকল্পে কাজ করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বুঝতে পারেন জ্বর, সর্দি ও বুকব্যথায় ওই ওষুধগুলো খুব বেশি কার্যকর না।
আজিদা বেগম আরও বলেন, যদি ব্যবস্থাপত্রটি দিয়ে দেওয়া হতো, তাহলে বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে পারতেন। মেছিডেংগী গ্রাম থেকে কোমরের ব্যথা নিয়ে এসেছেন বেগম নামের আরেক রোগী। তাঁকে বহির্বিভাগে ব্যবস্থাপত্র করে একই ওষুধ দেওয়া হয়।
জানতে চাইলে চিকিৎসা কর্মকর্তা কাওসার নিগার বলেন, ‘যে রোগীর জন্য যা প্রয়োজন, সে অনুযায়ীই ব্যবস্থাপত্র করি।’
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফটকের সামনে একই রকম অভিযোগ করেন আরও কয়েকজন রোগী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিযোগ করেন, চাইলেও তাঁরা ব্যবস্থাপত্র দেন না। তাঁরা বলেন, ব্যবস্থাপত্র দিয়ে দিলে বাইরে থেকে ওষুধ কিনে নিতে পারতেন। কিন্তু ব্যবস্থাপত্র না দেওয়ায় অনেক রোগীকে গৌরীপুর উপজেলা অথবা ময়মনসিংহ শহরে গিয়ে ‘প্রাইভেট’ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ফার্মাসিস্ট আবদুর রাজ্জাক বলেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে যে ওষুধ আছে, তা-ই দেওয়া হয়। তিনি এও বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই প্যারাসিটামল-জাতীয় ওষুধ তাঁদের সংগ্রহে নেই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা চন্দন চক্রবর্তী বলেন, ব্যবস্থাপত্র দিয়ে রোগীদের বাইরে থেকে ওষুধ কিনে নেওয়ার কথা বলে দেওয়ার নিয়ম আছে। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের বলে দেওয়া হবে যেন তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপত্র রোগীদের দিয়ে দেন। শিগগিরই ওষুধসংকটের সমাধানের চেষ্টা করা হবে।