সাতক্ষীরায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ

সাতক্ষীরায় একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুলিশের দাবি, তিনি শিবিরের কর্মী। পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি গুলিতে আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ ওই তরুণের দাবি, তিনি আর রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাঁকে গুলি করেছে পুলিশ।

গুলিবিদ্ধ তরুণের নাম মিলন রহমান ওরফে সোহাগ (১৯)। সাতক্ষীরার সখিপুর খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী তিনি। তাঁর বাবা শাহাদাত্ হোসেন। তাঁদের বাড়ি সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ধোপাডাঙ্গামোড় এলাকায়।

গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সোয়া দুইটার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মিলনকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, তাদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি গুলিতে আহত হয়েছেন মিলন। এ সময় জামায়াত-শিবিরের ছোড়া গুলিতে পুলিশের দুই কনস্টেবলও সামান্য আহত হন।

দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী জামালউদ্দিনের ভাষ্য, উপজেলার খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ কলেজের পূর্ব পাশে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা জড়ো হয়েছেন বলে গতকাল রাতে খবর পায় পুলিশ। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা নাশকতা করতে পারেন—এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি ছোড়েন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থলে মিলনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় কনস্টেবল সোহরাব হোসেন ও আকবর আলী সামান্য আহত হয়েছেন। তাঁদের দেবহাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গুলিবিদ্ধ মিলনের দাবি, তিনি শিবিরের একজন কর্মী ছিলেন। ২০১৩ সালের মার্চে সড়ক অবরোধের অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিন মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্তি পান তিনি। ওই ঘটনার পর থেকে তিনি আর রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। বর্তমানে তাঁর এইচএসসি পরীক্ষা চলছে। তিনটি পরীক্ষা দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে বাড়িতে পড়ছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন রাত থেকে গতকাল সারা দিন তাঁকে দেবহাটা থানায় আটকে রাখা হয়। গতকাল রাতে অভিযানের নামে তাঁকে থানা থেকে নিয়ে বের হয় পুলিশ। সখিপুর খান বাহাদুর আহছানউল্লাহ কলেজের পাশে নিয়ে তাঁর ডান পায়ের হাঁটুর নিচে পুলিশ গুলি করে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিত্সক মো. হাফিজুল্লাহ বলেন, রাত সোয়া দুইটার দিকে মিলন রহমান নামের একজনকে নিয়ে আসে পুলিশ। তাঁর ডান পায়ের হাঁটুর নিচে গুলি লেগেছে। অস্ত্রোপচার করে চারটি গুলি বের করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি শঙ্কামুক্ত।

দেবহাটা থানার ওসি কাজী জামালউদ্দিনের ভাষ্য, মিলন আওয়ামী লীগের নেতা আবু রায়হান হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি।