সূর্যসেন হলে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, ২০ ককটেল উদ্ধার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় দুই পক্ষের অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষের পর পুলিশ সভাপতি পক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকা একটি কক্ষ থেকে ২০টি ককটেল উদ্ধার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জসীমউদদীন হলের ক্যানটিনে খাওয়ার সময় কথা-কাটাকাটির জের ধরে খাওয়ার পর সেখানে সাধারণ সম্পাদক আরেফিন সিদ্দিক পক্ষের প্রথম বর্ষের দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করেন সভাপতি মোবারক হোসেনের অনুসারী কয়েকজন। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান জসীমউদ্দীন হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী।
আহত শিক্ষার্থীরা মুঠোফোনে ঘটনাটি নিজেদের পক্ষের কর্মীদের জানালে তাঁরা প্রস্তুতি নিতে থাকেন। সাধারণ সম্পাদক আরেফিন সিদ্দিক তখন হলের বাইরে ছিলেন। তাঁর অনুসারীরা জড়ো হচ্ছেন শুনে তিনি হলে আসেন। হলের ভেতরে দোকানের সামনে তিনি নিজের অনুসারীদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। এ সময় সভাপতি মোবারক হোসেনের কর্মীরা মসজিদের সামনে দুটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। তখন এ পক্ষ থেকেও স্লোগান শুরু হতে থাকে। ককটেল বিস্ফোরণের পর আরেফিন সিদ্দিক নিজেই তাঁর কর্মীদের নিয়ে সভাপতির কর্মীদের ধাওয়া দেন।
সভাপতির অনুসারীরাও একত্র হয়ে রামদা-চাপাতি-রড-লাঠি নিয়ে তেড়ে আসেন। হলের মাঠেই দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলতে থাকে। একপর্যায়ে নিরাপদ দূরত্বে থেকে দুই পক্ষ ঢিল ছোড়াছুড়িতে লিপ্ত হয়। ঢিলের আঘাতে এ সময় অন্তত তিনজন আহত হন। তাঁদেরও হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা গেছে।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও সহকারী প্রক্টররা হলে যান। তাঁদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসানও ছিলেন। তাঁরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক ওমর শরীফও ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ সময় হলের বাইরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সংঘর্ষের পর পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে সভাপতির পক্ষের একটি কক্ষ থেকে ২০টি ককটেল ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের কক্ষ থেকে একটি রামদাসহ বিপুল পরিমাণ রড ও লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে।
হলের প্রাধ্যক্ষ মাকসুদ কামাল বলেন, যে কক্ষ থেকে অস্ত্র পাওয়া গেছে, সেগুলো সিলগালা করা হয়েছে। ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। সেই তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এম আমজাদ আলী বলেন, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য পুলিশি তল্লাশির ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুরো হলেই তারা তল্লাশি করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।