মেলার নামে জুয়া ও অশ্লীল নাচের আসর ভেঙে দিল প্রশাসন

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর-যদুপুর নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বৈশাখী মেলার নামে আয়োজিত জুয়া ও অশ্লীল নাচের আসর ভেঙে দিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি মেলার প্রধান আয়োজক সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য আব্বাস আলীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল আমিন ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোকলেছুর রহমান পুলিশের সহায়তায় গতকাল বুধবার কথিত ওই মেলার মাঠে অভিযান চালান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আব্বাস আলী ও তাঁর অনুসারীরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিষেধ অগ্রাহ্য করে এবং প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে পয়লা বৈশাখ থেকে ওই মেলার আয়োজন করেন। মেলার নামে সেখানে জুয়া ও অশ্লীল নাচের আসর বসানো হয়।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সভাপতি গোলাম সরোয়ার জানান, বিদ্যালয়ের মাঠে মেলার আয়োজনের অনুমতি চেয়ে স্থানীয় যুবসমাজের নামে ৫ এপ্রিল এসএমসি বরাবর একটি আবেদন করা হয়। মেলার নামে অশ্লীল নাচের আসর বসানোর আশঙ্কায় কমিটি অনুমোদন দেয়নি। পরে আয়োজকেরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ওয়ালিউল্লাহর কাছ থেকে একটি অনাপত্তিপত্র নেন, যাতে বলা হয়, ‘জেলা প্রশাসন অনুমতি দিলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোনো আপত্তি থাকবে না।’
বিষয়টি জানাজানি হলে ১২ এপ্রিল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে সমাবেশ ও মানববন্ধন করে। এর পরও জোর করেই বিদ্যালয়ের মাঠে মেলার আয়োজন করা হয়। ১৩ এপ্রিল বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেয়। তা সত্ত্বেও ১৪ ও ১৫ এপ্রিল রাতে বিদ্যালয়ের মাঠে মেলার নামে জুয়া ও অশ্লীল নাচের আসর চলে।
গতকাল সকালে পুলিশ নিয়ে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে প্যান্ডেল ভেঙে দেন। একপর্যায়ে জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযানে যোগ দেন। বেলা দুইটার দিকে আব্বাস আলীকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালতের বিচারক মোকলেছুর রহমান তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। পরে আব্বাস ওই অর্থ পরিশোধ করে মুক্তি পান।