জীবিত ফেরত আসব, সেই আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম

অপহরণকারীদের কাছ থেকে মুক্ত আবু বকর সিদ্দিক বলেছেন, ‘জীবিত ফেরত আসব, সেই আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ফেরত আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। তবে এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাকে আরও সচেতনভাবে চলতে হবে।’
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মুক্তি পাওয়া আবু বকর সিদ্দিক গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে আদালতে জবানবন্দি দিয়ে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তাঁর স্ত্রী বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন। আবু বকর বেলা একটা থেকে দেড় ঘণ্টাব্যাপী নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম চাঁদনী রূপমের আদালতে জবানবন্দি দেন।
আবু বকর ও সৈয়দা রিজওয়ানা গতকাল বেলা তিনটার দিকে ফতুল্লার দাপায় হামিদ ফ্যাশনে যান। আবু বকর ওই প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক। সঙ্গে ছিল নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। সেখানে শ্রমিকেরা তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। পরে তাঁকে নিয়ে পুলিশ অপহরণস্থলে (ভূঁইগড়ের ভূঁইয়া ফিলিং স্টেশনের সামনে) যায় এবং তিনি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেন। পরে স্ত্রীসহ আবু বকরকে নিয়ে জেলা পুলিশের একটি দল রাজধানীর সেন্ট্রাল রোডের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থায় আবু বকর, রিজওয়ানা হাসান, আবু বকরের মা মঞ্জুর আরা জলিলকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নেওয়া হয়। সেখানে আবু বকরের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার শেখ মো. ফরহাদ। তিনি জানান, আবু বকরের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। তা ছাড়া তাঁর চোখ বাঁধার কারণে নাকের মধ্যখানে এবং হাত বাঁধার কারণে দুই হাতের কবজিতে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। এ ছাড়া তেমন কোনো সমস্যা নেই।
পুলিশ সুপার জানান, আবু বকর সিদ্দিকের কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা হয়েছে। এগুলো মামলার তদন্তে কাজে লাগবে। তাঁকে উদ্ধার করতে না পারলেও উদ্ধারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা এবং গণমাধ্যমের ভূমিকার কারণে অপহরণকারীদের লক্ষ্য হাসিল হয়নি। তিনি অপহরণকারীদের চিনতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।
অপহূত হওয়ার আগে আবু বকর যে গাড়িতে ঢাকায় ফিরছিলেন, সেটি পরীক্ষা করেছে সিআইডির ফরেনসিক দল।