সেতুর অভাবে ৬ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের রাঙ্গামাটিয়া গ্রামে ‘মালিঝি খালের’ ওপর নির্মিত কাঠের সাঁকোটি নড়বড়ে ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ইউনিয়নের ছয়টি গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষ সাঁকোটির ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে সাবেক সাংসদ মো. মাহমুদুল হকের উদ্যোগে মালিঝি খালের ওপর প্রায় ২০০ ফুট দীর্ঘ একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি পর্যায়ে সাঁকোটির কোনো সংস্কার না হওয়ায় সেটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ কারণে রাঙ্গামাটিয়া, ঘোষগাঁও, বামোনতলা, কলসপাড়, খাটুয়াপাড়া ও কালীপাড়া গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ দুই হাজার মানুষ ওই ভাঙা ও নড়বড়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যেকোনো সময় সাঁকোটি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে রাঙ্গামাটিয়া খাটুয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবদুল হাকিম প্রথম আলোকে বলেন, রাঙ্গামাটিয়াসহ এই ছয়টি গ্রাম উপজেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত। এ সাঁকো পারাপার ছাড়া এসব গ্রামের মানুষের উপজেলা সদরে যাতায়াতের কোনো পথ নেই। তিনি আরও বলেন, সরকারের তরফ থেকে সাঁকোটি মেরামত বা সংস্কার না করায় তিনি এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ১০ বছর যাবৎ এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে যাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমানে এটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে।

খাটুয়াপাড়া গ্রামের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জাহিদ হাছান (১২) বলে, বর্ষা মৌসুমে খালটিতে তীব্র স্রোত থাকে। তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের সাঁকোটি পার হতে হয়।

রাঙ্গামাটিয়া গ্রামের কৃষক মো. শাহাজ উদ্দিন (৬০) আক্ষেপ করে বলেন, নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা খালটির ওপর একটি সেতু তৈরি করার প্রতিশ্রুতি দিলেও আজ পর্যন্ত কোনো চেয়ারম্যান তা বাস্তবায়ন করেননি। সাঁকোটির স্থলে একটি পাকা সেতু তৈরি করে দেওয়া হলে এলাকাবাসীর চলাচলে দুর্ভোগের অবসান হবে।

জানতে চাইলে ঝিনাইগাতীর মালিঝিকান্দা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শফিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এলাকাবাসীর কষ্ট দূর করতে মালিঝি খালটিতে একটি পাকা সেতু নির্মাণের জন্য তিনি একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।

ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমির আলী প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে কথা বলে খালটির ওপর একটি সেতু নির্মাণের জন্য তিনি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন।