সারা দেশে ঝড়-বজ্রপাতে নিহত ১৪

নেত্রকোনার পাঁচটি উপজেলায় গতকাল রোববার কালবৈশাখীর আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় হাজারো ঘরবাড়ি। ছবি : মোহাম্মদ খায়রুল হক
নেত্রকোনার পাঁচটি উপজেলায় গতকাল রোববার কালবৈশাখীর আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় হাজারো ঘরবাড়ি। ছবি : মোহাম্মদ খায়রুল হক

দেশের বিভিন্ন স্থানে গতকাল রোববার রাতে কালবৈশাখী আঘাত হেনেছে। এ ছাড়া আজ সোমবার ভোরে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১৪ জন মারা গেছে। আহত হয়েছে ২৫০ জনের বেশি। নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে।

নেত্রকোনা: নেত্রকোনার কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, বারহাট্টা, মোহনগঞ্জ ও নেত্রকোনা সদর উপজেলায় গতকাল রাতে কালবৈশাখী আঘাত হানে। এতে নয়জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক মানুষ। ঝড়ে এসব উপজেলার ছয় হাজার কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফসলেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু উপজেলা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তৌহিদুল ইসলাম এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলো কলমাকান্দা উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের বিষমপুর গ্রামের একই পরিবারের আবদুল মোতালেবের ছেলে সাগর মিয়া (১০), রানা মিয়া (৪), রাসেল মিয়া (৬) ও মোতালেবের স্ত্রী আফরোজা বেগম (৩৫), একই ইউনিয়নের রানীগাঁও গ্রামের আবুলেন্নেছা (৭০), কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের নয়ানগর গ্রামের মামুন (১৪), বারহাট্টা উপজেলার গাবড়কান্দা গ্রামের এমদাদ (১৪), মোহনগঞ্জ উপজেলার হরিপুর গ্রামের সোমা আক্তার (৯) ও নেত্রকোনা সদর উপজেলার ঠাকরোকোনা ইউনিয়নের বর্নি গ্রামের ফজর আলী মুন্সি (৮০)। এসব লোকজনের মধ্যে ফজর আলী মুন্সি ঘরের দেয়াল চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন।

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলায় কালবৈশাখীতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক। গতকাল রোববার রাত ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ ঝড় হয়। ঝড়ে নিহত ব্যক্তিরা হলেন কাশু মিয়া (৩৪), সামছু মিয়া (৬৫), দুধ মিয়া (৫০) ও বিবি আক্তার (৭)। এ সময় অনেক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে ও গাছপালা উপড়ে পড়েছে। সড়কে গাছ পড়ায় যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. খালেদুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

গোয়ালন্দ: কালবৈশাখী ঝড়ের কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে নৌচলাচল ব্যাহত হয়েছে। গতকাল দিবাগত রাতে দেড় ঘণ্টার এবং আজ সোমবার ভোরে এক ঘণ্টার মতো ওই নৌপথে লঞ্চ, ফেরিসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল।

এ ছাড়া আজ সকালে ঝড় চলাকালে দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে এক জেলে মারা গেছেন। তাঁর নাম ফরিদ শেখ (৩০)। এ ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই ফরহাদ শেখ (২৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নেত্রকোনা, ধরমপাশা (সুনামগঞ্জ) ও গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি]