ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের উজানচর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হাসেম মণ্ডলের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৩৭ একর জমি ভুয়া মালিকদের নামে রেকর্ডভুক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে নয়জন ভূমিমালিক ১৩ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উজানচর ইউনিয়নের ১০৭ নম্বর মহিদাপুর চরখণ্ড মৌজার ১৯৬৭ সালের সর্বশেষ চর্চা খতিয়ানের ৩২০ নম্বর দাগের ৮৩ একর জমির মধ্যে ৩৬ দশমিক ৮৫ একর তাঁদের নিজের ও বাবাদের নামে রেকর্ডভুক্ত করা হয়। ব্রিটিশ আমলের এসএ রেকর্ড চলাকালীন মৌজাটি পদ্মার গর্ভে থাকায় রেকর্ড হয়নি। ফলে চর্চা রেকর্ডই ওই মৌজার একমাত্র রেকর্ড। প্রায় ৪০ বছর নদীগর্ভে থাকার পর চার বছর আগে মৌজাটি জেগে উঠলেও খাজনা আদায় বন্ধ থাকায় তাঁরা খাজনা দিতে পারেননি।

লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ওয়ারিশরা খাজনা পরিশোধ করতে গেলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হাসেম মণ্ডল খাজনা গ্রহণে অনীহা প্রকাশ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি নয়জনের মধ্যে আটজনকে জানিয়ে দেন, তাঁদের কিংবা তাঁদের বাবাদের নামে চর্চা খতিয়ানে কোনো জমি নেই। কিন্তু তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন চর্চা খতিয়ানের রেকর্ড বই থেকে প্রকৃত মালিকদের নামের পাতা ছিঁড়ে ফেলে সেখানে নতুন পাতা লাগিয়ে ভুয়া মালিকের নাম সংযোজন করা হয়েছে। এসব ভুয়া মালিকের কাছ থেকে একরপ্রতি এক লাখ টাকা করে ঘুষ আদায় করেছেন বলেও তাঁরা জানতে পারেন। খতিয়ান বইয়ে তৎকালীন কালি-কলমের ঝাপসা লেখা থাকলেও বর্তমানে সেখানে বলপয়েন্ট কলমের লেখা রয়েছে।

ছোট ভাকলা ইউনিয়নের বরাট গ্রামের আবদুস সামাদ মোল্লা বলেন, তাঁর বাবা মহর আলীর নামে চর্চা খতিয়ানের ৩২০ নম্বর দাগে নয় একর জমি রয়েছে। দুই-তিন বছর আগে জমির রেকর্ডপত্রও ঠিক ছিল। কিন্তু কয়েক মাস আগে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হাসেম মণ্ডল বলেছেন, তাঁর বাবার নামে ওই দাগে কোনো জমিই নেই।

ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা হাসেম মণ্ডল দাবি করেন, ‘যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তদন্ত হওয়া উচিত। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত শেষেই প্রমাণিত হবে আমি নিরপরাধ।’          

 অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এস এম আনসারুজ্জামান বলেন, ১৮ এপ্রিল উজানচর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে গিয়ে প্রাথমিক তদন্তে চর্চা খতিয়ান বইয়ের পাতার কিছু পরিবর্তন ও গরমিল পাওয়া গেছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে তিনি জমা দেবেন।