'অন্যায় ঠেকাতে অন্যায়'

পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ত মেয়েটি। ২০১৩ সালে সপ্তম শ্রেণীতে থাকাকালেই পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয় তাকে৷ বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে পড়া বন্ধ হয়ে যায় তার। তবে বিয়ের পরেও পড়াশোনা করে অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন তার। এ বছর বাবার বািড়তে ফিরে এসে আবার স্কুলে ভর্তি হতে যায় সে৷ কিন্তু বাদ সাধে স্কুল কর্তৃপক্ষের ‘নিয়ম’, বিবাহিত মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করা হবে না৷
মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পাবনা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান বলেন, দেশের প্রচলিত আইন বাল্যবিবাহকে সমর্থন করে না৷ বাল্যবিবাহ দিয়ে মেয়েটির সঙ্গে একটা অন্যায় করা হয়েছে৷ আবার বিবাহিত বলে তাকে স্কুলে ভর্তি না করে স্কুল কর্তৃপক্ষও অন্যায় করেছে৷
রিক্তা খাতুনের অভিযোগ, তার মতো আরও কয়েকজনের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটেছে। তারা কয়েকবার স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেও ভর্তি হতে পারেনি৷ ফলে পড়ালেখা ছেড়ে দিতে হচ্ছে৷ কয়েকজন অভিভাবক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গ্রামের পরিবেশ ‘খারাপ’৷ এ জন্য তারা বাধ্য হয়ে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। এতে মেয়ের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে, তা ভাবেননি।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার প্রতিটি স্কুলে শতভাগ পাস নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে৷ কিন্তু বিবাহিতরা ঠিকমতো পড়ালেখা করে না, স্কুলেও আসে না। ফলে তাদের ফেল করার আশঙ্কা থাকে। সঙ্গে বাল্যবিবাহকে অনুৎসাহিত করার বিষয়টিও বিবেচনায় নিয়ে আমরা নিজেরা বসে বিবাহিতদের ভর্তি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷’
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, বিবাহিত মেয়েদের স্কুলে ভর্তি করা যাবে না, এমন কোনো বিধান নেই। বিবাহিত মেয়েদের ভর্তি না করা অন্যায়। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷