আ.লীগ, বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীরা 'জনবিচ্ছিন্ন'

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবগঠিত বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয়জন৷ এর মধ্যে বিএনপিরই দুজন৷ এঁদের কারণে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা৷
তাই সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী৷ তবে তাঁর বিরুদ্ধে জনবিচ্ছিন্নতার অভিযোগ রয়েছে৷ বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীও ‘জনবিচ্ছিন্ন’ বলে জানা গেছে৷ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে মনে করছেন রাজনীতিবিদ ও সাধারণ ভোটাররা৷
১৯ মে প্রথমবারের মতো বিজয়নগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হবে৷ ওই নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী তানভীর ভূঁইয়াকে সমর্থন দেয় জেলা কমিটি৷
বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানান, চেয়ারম্যান পদে বিএনপির সমর্থন চান চারজন৷ জেলা বিএনপি উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী শরিফুল ইসলামকে সমর্থন দেয়৷ কিন্তু উপজেলার ১০ ইউনিয়নের তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ওই সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারেননি৷
১ মে উপজেলার সাটিরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা বিএনপির সভাপতি হারুন মুন্সীর সভাপতিত্বে সমাবেশে যোগ দেন দলটির ১০ ইউনিয়নের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা৷ তাঁরা বিদ্রোহী প্রার্থী প্রকৌশলী কাজী রফিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান পদে সমর্থন দেওয়ার ঘোষণা দেন৷
এ ছাড়া একই পদে উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক, নির্দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ও সাহিদ সিরাজী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷
গত সোমবার উপজেলার চান্দুরা, চম্পকনগর, মির্জাপুর, হরষপুর, নোয়াগাঁও, সিংগারবিল ও পাহাড়পুর ইউনিয়ন ঘুরে আওয়ামী লীগ, বিএনপির নেতা ও বেশ কয়েকজন সাধারণ ভোটারের সঙ্গে কথা হয়৷ তাঁরা জানান, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-সমর্থিত দুজনই আইনজীবী৷ এ কারণে দুজনই এলাকায় থাকেন না৷ নির্বাচনের আগে সর্বশেষ তাঁরা কবে এলাকায় এসেছিলেন তা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেননি৷
পাহাড়পুরের খাটিঙ্গা গ্রামের একটি চায়ের দোকানে বসলে কয়েকজন লোককে নির্বাচন নিয়ে আলাপ করতে দেখা যায়৷ তাঁরা বিএনপির ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী রফিকুলের এগিয়ে থাকা নিয়ে কথা বলছিলেন৷ সেখানে প্রবাসী হারুন মিয়া বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে রফিকুলই জিতবে৷’ অন্যরাও তাঁর বক্তব্য সমর্থন করেন৷
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা বলেন, দুজন প্রার্থী থাকায় তাঁরা বেশ বেকায়দায় আছেন৷
উপজেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জেলা বিএনপি একজন জনবিচ্ছিন্ন প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে ভালো করেনি৷
তানভীর ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মী আমার পক্ষে কাজ করছেন৷ জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী৷’
শরিফুল ইসলাম জনবিচ্ছিন্নতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘বেশির ভাগ নেতাই ঢাকায় থাকেন৷ বিএনপি থেকে আমাকে সমর্থন দেওয়ায় কয়েকজন নাখোশ হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন৷’
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভোটকেন্দ্র সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের প্রভাবমুক্ত হলে জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী৷’ তিনি প্রশাসনের প্রতি নিরপেক্ষ থাকার অনুরোধ জানান৷
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা বলেন, উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন৷ বিদ্রোহী প্রার্থীকে ইতিমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে৷