কুমিল্লায় চিকিৎসক, মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত

কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার হরিশ্চর এলাকায় গত বুধবার রাতে পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে চিকিৎসক, কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার ওই মেডিকেল কলেজের সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বেলা ১১টার পর স্থগিত রাখা হয়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন চিকিৎসক আশিকুর রহমান (২৭), কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু আবদুল্লাহ আসলাম (২৭) ও আসলামের বন্ধু মোহাম্মদ জনি। আশিকুরও ওই মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
এলাকাবাসীর কয়েকজন ও পুলিশ জানায়, ওই দিন রাতে লাকসাম থেকে মোটরসাইকেলে করে কুমিল্লায় ফিরছিলেন আশিকুর, আসলাম ও জনি। তাঁদের বহনকারী মোটরসাইকেলটি রাত সাড়ে আটটার দিকে হরিশ্চর এলাকায় এলে বিপরীত দিকে থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই আসলাম নিহত হন। আহত আশিকুরকে কুমিল্লার মুন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে রাত তিনটার দিকে তিনি মারা যান। আহত জনি গতকাল সকাল সাতটার দিকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. ফখরুল আবেদীন বলেন, আশিকুরও তাঁদের মেডিকেল কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। ৬ জুলাই তিনি এফসিপিএস পার্ট-১ (সার্জারি) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তাঁর বাড়ি লাকসাম রেলজংশন এলাকায়। আশিকুরের মা নাসরিন আক্তার লাকসামের চিকিৎসা সহকারী। আশিকুরের বাবা আজিজুর রহমান কাতারপ্রবাসী। গতকাল বাদ জোহর আশিকুরের জানাজা লাকসাম রেলওয়ে হাইস্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁকে জংশন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
আসলামের বাড়ি কুমিল্লা নগরের দক্ষিণ চর্থা বড় পুকুরপাড় এলাকায়। তিনি ওই এলাকার আবদুর রাজ্জাকের ছেলে। দুই ভাইয়ের মধ্যে আসলাম ছোট। বিকেল পাঁচটায় জানাজা শেষে তাঁকে দক্ষিণ চর্থা কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ছাড়া মোটরসাইকেল চালক মোহাম্মদ জনি পেশায় ঠিকাদার। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ চর্থা এলাকায়। জনির মোটরসাইকেলে করেই তাঁরা লাকসামে গিয়েছিলেন। জনির বাবার নাম নাসির উদ্দিন ও মায়ের নাম হাসনা বেগম।
লালমাই হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খোরশেদ আলম জানান, ‘দুর্ঘটনাকবলিত মোটরসাইকেল ও পিকআপ ভ্যানটি ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছি। পিকআপ ভ্যানের চালক দুর্ঘটনার পর পালিয়ে গেছেন।’ সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইনুল হক বলেন, এ ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।