প্রখ্যাত আইনজীবী ড. এম জহির আর নেই

ড. এম জহির
ড. এম জহির

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ এম জহির আর নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। এম জহিরের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘ড. এম. জহির অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস’-এর আইনজবীবী শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্যাংককের জেনারেল হাসপাতালে দেশের এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মারা যান। প্রখ্যাত আইনজীবী এম জহিরের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের শোকবার্তায় বলা হয়েছে, এম জহিরের মৃত্যুতে বাংলাদেশের আইন অঙ্গনে অপূরণীয় শূন্যতা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আজ দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমানে এম জহিরের মরদেহ ঢাকায় এসে পৌঁছাবে। মরহুমের জানাজা বেলা পৌনে তিনটায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ নেওয়া হবে তাঁর ধানমন্ডির বাসভনে। দ্বিতীয় জানাজা বাদ আসর ধানমন্ডির ৭ নম্বর সড়কের মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। তারপর মরদেহ বনানীতে বাবা-মায়ের কবরস্থানের পাশে দাফন করা হবে। এম জহির মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে, তিন নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। ১৯৩৯ সালের ২২ মে পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার পর তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬২ সালে ঢাকা হাইকোর্টে আইন পেশায় চর্চা শুরু করেন। লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬৪ সালে এলএলএম এবং ১৯৬৬ সালে কোম্পানি আইনের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রায় ২০ বছর ধরে কোম্পানি আইনের ওপর পাঠদান করেন। ১৯৭৪-৭৫ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ান অ্যাটর্নি জেনারেলের বিভাগে এবং অল্প সময়ের জন্য নিউ সাউথ ওয়েলস ল রিফর্ম কমিশনের জন্য কাজ করেন। প্যারিসের কোর্ট অব আরবিট্রেশন অ্যাট দি ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কর্মাসের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে এম জহির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। সংবিধান ও করপোরেট আইনজীবী হিসেবে তিনি দেশে ও বিদেশে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। কোম্পানি ও সিকিউরিটি আইনেও তিনি বিশেষ পারদর্শী ছিলেন। এম জহিরের মৃত্যুতে ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন শোক প্রকাশ করেছে।