জামালপুরে যমুনার ভাঙন, হুমকিতে বিস্তীর্ণ জনপদ

যমুনার ভাঙনে গত কয়েক বছরে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার মানচিত্র থেকে মুছে গেছে সাপধরী নামক ইউনিয়নটি৷
এ ছাড়া উপজেলার কুলকান্দি ইউনিয়নের ১৯টি এবং পার্থশী, নোয়ারপাড়া, বেলগাছা ও চিনাডুলি ইউনিয়নের আরও অন্তত ২০টি গ্রাম নদীতে বিলীন হয়েছে৷ টিকে থাকা বাকি গ্রামগুলোও গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে যমুনার ভাঙনের মুখে পড়েছে৷ প্রতিবছরই ভাঙন শুরু হলে নদীপাড়ে কিছু বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলা ছাড়া এলাকাটি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয় না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ৷
নদীতীরের গুঠাইল বাজার, কুলকান্দিঘাট, বেলগাছার অস্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, যমুনায় পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভাঙন শুরু হয়েছে। গুঠাইল বাজারের হার্ড পয়েন্টের বেশ কিছু অংশ স্রোতের তোড়ে এরই মধ্যে ধসে গেছে৷ ফাটল দেখা গেছে অনেক স্থানে৷ পাউবো এসব স্থানে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে৷ নদীগর্ভে বিলীনের আশঙ্কায় হার্ড পয়েন্ট এলাকা থেকে দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। বেলগাছার অস্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ের একেবারে কাছে চলে এসেছে নদী৷ কুলকান্দি এলাকারও একই চিত্র দেখা যায়৷
স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে যমুনার অব্যাহত ভাঙনে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৭০টি গ্রাম বিলীন হয়েছে৷ ফলে উদ্বাস্তু হয়েছে হাজারো মানুষ৷ কিন্তু এই ভাঙন রোধে আজও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি৷
নোয়ারপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, ভাঙন শুরু হলে তড়িঘড়ি করে যে বালুর বস্তা ফেলা হয় তা কোনো কাজেই আসে না। তিনি আরও বলেন, গত দুই বছরে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়সহ কয়েক হাজার বাড়িঘর ও ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে৷
পাউবো জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা গেছে, যমুনার ভাঙন রোধে ১২০ কোটি টাকার চাহিদা দেওয়ার পরও বরাদ্দ পাওয়া গেছে মাত্র ৪০ কোটি টাকা।
স্থানীয় সাংসদ ফরিদুল হক খান মুঠোফোনে বলেন, ভাঙন রোধে পাউবোর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। পাউবো জামালপুরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক বলেন, গুঠাইল বাজার রক্ষায় হার্ড পয়েন্টের উত্তর অংশে তিন কিলোমিটার অংশে বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলা হয়েছে। এতে বাজারের উত্তর অংশ ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। ভাঙনকবলিত এলাকা রক্ষায় কাজ করতে বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষের কাজে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।