প্রাণ পেল পরিত্যক্ত বিদ্যালয়

রংপুরের কাউনিয়ায় টেপামধুপুর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় সংস্কারের কাজ করছেন মার্কিন িবমানবাহিনীর সদস্যরা৷ ছবিটি ইউএস প্যাসিফিক কমান্ডের সৌজন্যে পাওয়া
রংপুরের কাউনিয়ায় টেপামধুপুর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় সংস্কারের কাজ করছেন মার্কিন িবমানবাহিনীর সদস্যরা৷ ছবিটি ইউএস প্যাসিফিক কমান্ডের সৌজন্যে পাওয়া

ঢাকা থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরের উপজেলা রংপুরের কাউনিয়া৷ এই উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের নাম৷ ১৯৩৮ সালে নির্মিত টেপামধুপুর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় নানান প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সংস্কারের অভাবে প্রায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়েছিল। বিদ্যালয়মুখী হওয়া বন্ধ করেছিল শিক্ষার্থীরা৷ গতকাল রোববার দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, পুরোনো সেই বিদ্যালয় নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে৷
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র বিমানবাহিনীর যৌথ মানবিক সহায়তা কর্মসূচি ‘প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল-২০১৪-১’-এর আওতায় আধুনিক চেহারা পেয়েছে এই বিদ্যালয়টি৷ রংপুর ও নীলফামারীতে ১ থেকে ৫ জুন পরিচালিত এ কর্মসূচির আওতায় টেপামধুপুরসহ পাঁচটি বিদ্যালয় সংস্কারের পাশাপাশি চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালিত হয়৷ এ কর্মসূচিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫০ জন, বিমানবাহিনীর ১১৩ জন, পুলিশের ৫৯ জন সদস্যের পাশাপাশি ৪০ জন মেডিকেল শিক্ষার্থী, ২০ জন জনস্বাস্থ্যকর্মী, বিএনসিসির ২৫ জন এবং এনজিওর ৪০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন৷ তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন শ্রীলঙ্কার বিমানবাহিনীর দুই সদস্য৷
প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল-২০১৪-১-এর সমাপনী উপলক্ষে গতকাল দুপুরে টেপামধুপুর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়ে সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিমানবাহিনীর মেজর জেনারেল পটিনগার বলেন, ‘এই কর্মসূচি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের তাৎপর্য এবং এশিয়ায় দুর্যোগ মোকাবিলা ও মানবিক সহায়তায় আমাদের জোরালো অঙ্গীকারের দৃশ্যমান দৃষ্টান্ত৷’

সংস্কারকাজ করছেন এক মার্কিন সদস্য
সংস্কারকাজ করছেন এক মার্কিন সদস্য

যুক্তরাষ্ট্রের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জন ড্যানিলুইৎজ বলেন, সাম্প্রতিকালে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের চ্যালেঞ্জের কথা বলা হয়৷ অথচ দুই দেশের সম্পর্ক যেকোনো সময়ের তুলনায় আরও জোরদার হয়েছে৷ সফল এ কর্মসূচিতে দুই দেশের যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁদের সেবা এখানকার মানুষের হৃদয়ে চিরজাগরূক থাকবে৷
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আহমেদ জাকারিয়া, বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার মো. আবু রায়হান, মার্কিন বিমানবাহিনীর কর্নেল অ্যালানা।
অনুষ্ঠানের পর বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এয়ার কমোডর এ এইচ এম ফজলুল হক বলেন, ‘এ কর্মসূচির মাধ্যমে এখানকার লোকজন কীভাবে উপকৃত হয়েছে, সেটি না দেখলে বলে বোঝানো যাবে না৷ আবার স্কুলে আসবে জেনে শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখে যে আনন্দ দেখেছি, সেটি যে কারও আবেগকে স্পর্শ করবে৷’
প্যাসিফিক অ্যাঞ্জেল-২০১৪-১-এর আওতায় চিকিৎসাসেবা কর্মসূচির বর্ণনা দিতে গিয়ে মার্কিন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়েস্ট পালমার জানান, প্রতিদিন গড়ে এক হাজার করে পাঁচ হাজারের বেশি রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে৷ এ ছাড়া চিকিৎসা পেশার সঙ্গে জড়িত কয়েকজন পেশাজীবীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ সার্জেন্ট ব্র্যান ফ্রিকলে জানান, এ কর্মসূচির আওতায় সব মিলিয়ে পাঁচটি স্কুল সংস্কার করা হয়েছে৷ প্রতিটি স্কুলেই আধুনিক উপায়ে সংস্কারের পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে৷