চরমপন্থী পরিচয়ে চাঁদা দাবি

সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় জনযুদ্ধ গোষ্ঠীর কমান্ডার পরিচয় দিয়ে মুঠোফোনে ব্যাংকের ব্যবস্থাপকদের কাছে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদা না দিলে স্বজনদের অপহরণ ও হত্যার হুমিক দেওয়া হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ব্যবস্থাপকেরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, চরমপন্থী সংগঠন জনযুদ্ধ গোষ্ঠীর আঞ্চলিক কমান্ডার হাতকাটা বিপ্লব পরিচয় দিয়ে গত বুধবার অগ্রণী ও সোনালী ব্যাংকের করপোরেট মুঠোফোন নম্বরগুলোতে ফোন করা হয়। ফোনে বলা হয়, তাঁদের পার্টির বেশ কিছু নেতা-কর্মী পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে আহত হয়ে ভারতে চিকিৎসাধীন। তাঁদের চিকিৎসা করাতে ৭০ লাখ টাকা লাগবে। এই খরচের টাকা জোগাড় করতে তাঁরা বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করছেন। আপনার কাছেও সহযোিগতা কামনা করা হচ্ছে।
অগ্রণী ব্যাংকের তালগাছী শাখার ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জনযুদ্ধ গোষ্ঠীর আঞ্চলিক কমান্ডার পরিচয় দিয়ে একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে ফোন দিয়ে বিভিন্ন কথা বলার পর আমার কাছে দুই লাখ টাকা দািব করা হয়। এর আগে ২ জুন শাহজাদপুর পৌর শহরের সোনালী ও অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপকদের ফোন করে চাঁদা দািব করা হয়। আমি এত টাকা কোথা থেকে দেব—এ কথা বললে তিনি গালাগাল শুরু করেন। এ টাকা না দিলে পরিবারের সদস্যদের অপহরণ ও তাদের খুন করে টুকরা টুকরা করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। এরপর আমি বিষয়টি উল্লেখ করে শাহজাদপুর থানায় একটি জিডি করি।’
জেলার তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, বেলকুচি, সদরসহ অন্য উপজেলায়ও একইভাবে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মুঠোফোনে হুমিক দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে সদর, তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর ও বেলকুচি থানায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপকেরা জিডি করেছেন।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম ইকবাল জানান, ব্যাংক ব্যবস্থাপকদের করপোরেট নম্বরগুলো সংগ্রহ করে তারা (জনযুদ্ধ গোষ্ঠী) চাঁদা দাবি করছে৷ এ ব্যাপারে থানায় পাঁচটি জিডি করা হয়েছে৷ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার এস এম এমরান হোসেন জানান, দুটি ফোন নম্বর থেকে অনেক ব্যবস্থাপকের কাছে ফোন করা হয়েছে। নম্বরগুলোর কল তালিকা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। জনযুদ্ধ বা সর্বহারা সংগঠনের সদস্যরা সাধারণত ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে চাঁদা দাবি করেন। এখানে শুধু ব্যাংকের ব্যবস্থ্যাপকদের কাছে চাঁদা দাবি করা হয়েছে। বর্তমানে ঋণের মৌসুম চলছে। ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা ব্যবস্থাপকদের ভয় দেখানোর জন্যও এমনটা করতে পারেন। এর পরও সার্বিক বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করা হচ্ছে।