স্ত্রীকে মারধর করে চুল কেটে দিলেন শ্রমিক লীগের নেতা

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধর করে তাঁর মাথার চুল কেটে দিয়েছেন শ্রমিক লীগের এক নেতা৷ লুট করেছেন শ্যালকের দুটি গরু৷ গতকাল সোমবার ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার কুকরি-মুকরি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷
শ্রমিক লীগের ওই নেতার নাম মতলেব মোল্লা (৪০)৷ কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহসভাপতি মতলেব মোল্লা মুঠোফোনে বলেন, ‘এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র৷ আমি দোষী নই৷’
নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূ, তাঁর ভাই ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, কুকরি-মুকরি ইউনিয়নের আমিনপুর গ্রামের বাসিন্দা মতলেব মোল্লা এ পর্যন্ত সাতটি বিয়ে করেন৷ বিয়ের পর নির্যাতনের কারণে আগের ছয় স্ত্রীই তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন৷ সর্বশেষ এক বছর আগে মতলেব ফুঁসলিয়ে ওই গৃহবধূকে বিয়ে করেন৷ কিন্তু কয়েক মাস ধরে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের দাবিতে তিনি ওই নারীর ওপর নির্যাতন শুরু করেন৷ খবর পেয়ে এক মাস আগে ওই নারীর মা, বড় বোন, ছোট বোন ও ভাগনে মতলেব মোল্লার বাড়িতে যান৷ মতলেব তাঁদের পিটিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন৷ এ সময় ওই নারীও মা-বোনদের সঙ্গে নিজ বাড়িতে চলে যান৷
গত রোববার মতলেব স্ত্রীকে আনতে গেলে শ্যালক তাঁর বোনকে মোল্লাবাড়িতে আর পাঠাবেন না বলে জানিয়ে দেন৷ পরে এলাকার মাতবরদের নিয়ে সালিস বসিয়ে ওই নারীকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানো হয়৷ কিন্তু মতলেব গতকাল সকালে লোকজন নিয়ে শ্যালকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে দুটি গরু লুট করেন৷ পরে নিজ বাড়িতে এসে স্ত্রীকে মারধর করেন এবং খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে মাথার চুল কেটে দেন৷
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন হাওলাদার, শ্রমিক লীগের সহসভাপতি আলম হাওলাদার, যুবলীগের সভাপতি ফারুক মজুমদার, কুকরি-মুকরি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বাবুল চৌকিদারসহ ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা৷ তাঁরা জানান, মতলেব মোল্লা এলাকায় কাউকে মান্য করেন না৷ যৌতুক আদায়ের জন্য কিছুদিন পর পর তিনি বিয়ে করেন৷ যৌতুক না পেলে নির্যাতন করেন৷ এমনি করে গতকাল সকালে তিনি তাঁর সর্বশেষ স্ত্রীকে মারধরের পর চুল কেটে দেন৷
চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মেহেদী হাসান বলেন, ওই গৃহবধূকে মারধরের পর তাঁর স্বামী চুল কেটে দিয়েছেন৷ গৃহবধূকে দক্ষিণ আইচা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে৷ এ ব্যাপারে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে৷