যমুনার ভাঙনে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন

যমুনা নদীর ভাঙনে গত ২০ দিনে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি এবং প্রায় ২০০ একর আবাদি জমি বিলীন হয়েছে। আরও অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ভাঙনের ঝুঁকির মুখে রয়েছে৷
উত্তর দীঘলকান্দি গ্রামের কৃষক মফিজল হক (৫৫) বলেন, ‘দুই সপতাহের মদ্দে হামার পাঁচটা ঘর, দুই বিগা জমি নদীত চলি গেচে। হামরা একন মানসের বাড়িত থাকি।’ গুয়াবাড়ির চর গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন (৪৫) বলেন, প্রতিদিন ছয় থেকে সাত ফুট এলাকা নদীতে বিলীন হচ্ছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে ইউনিয়নটি আর রক্ষা করা যাবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আউয়াল মিয়া বলেন, ওই এলাকায় ভাঙনরোধে আপাতত কোনো কর্মসূচি নেই। তবে যমুনার ভাঙনরোধে সাঘাটা বন্দর এলাকায় ১৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সিসি ব্লক স্থাপনসহ নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ চলছে। পাউবো এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হলদিয়া ইউনিয়নের নদীভাঙনের কবলে পড়া আবাদি জমির পাটের চারা কৃষকেরা কেটে নিচ্ছেন৷ নদীর পাড় থেকে বশে দূরে কেউ কেউ নতুন বসতঘর তৈরি করেছেন৷
স্থানীয় লোকজন জানান, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নদী ভাঙছে। তাঁদের অনেকেই ভাঙন-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ২০ দিনের ব্যবধানে ইউনিয়নের চারটি গ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি, প্রায় ২০০ একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামগুলো হচ্ছে গুয়াবাড়িরচর, উত্তর দীঘলকান্দি, দক্ষিণ দীঘলকান্দি ও পাতিলবাড়ি।
উত্তর দীঘলকান্দি গ্রামের কৃষক জালাল উদ্দিন (৪৮) বলেন, ‘ঘরবাড়ি ভাঙ্গি গেচে, তার জন্নে হামরা সোরকারের কাচে ট্যাকা চাইনে। হামরা চাই, সোরকার নদি ভাঙ্গা বনদো করুক।’ একই ধরনের কথা বলেন ওই গ্রামের জাকিরুল ইসলামসহ (৫২) কয়েকজন৷
হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম জানান, ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাউবোকে কয়েকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।