জীবন বাজি রেখে পড়াশোনা

মাদারীপুরের কালকিনির বাঁশগাড়ী শহিদ স্মৃতি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ​ই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বারান্দায় ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা l ছবি: প্রথম আলো
মাদারীপুরের কালকিনির বাঁশগাড়ী শহিদ স্মৃতি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ​ই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বারান্দায় ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা l ছবি: প্রথম আলো

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশগাড়ী শহিদ স্মৃতি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় এক বছর আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছিল প্রশাসন৷ কিন্তু বিকল্প স্থান না থাকায় ওই ভবনেই শিশু শিক্ষার্থীদের পড়াচ্ছেন শিক্ষকেরা৷
এতে ঝড়-বৃষ্টির দিনে যেকোনো সময় ভবন ধসে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ তাই দ্রুত ভবনের সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও গ্রামবাসী৷
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানায়, গত বছরের ১০ জুন তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহরিয়াজ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী আবদুর রউফ বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শন করে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন৷ তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চলতে থাকে৷ এরপর গত ২৬ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুল ইসলামও বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে বিকল্প জায়গায় পাঠদান করাতে শিক্ষকদের নির্দেশ দিয়ে যান৷ কিন্তু বিকল্প জায়গা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানেই পাঠদান চলছে৷ এ কারণে সব সময় আতঙ্কিত থাকেন শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা৷ এ ছাড়া বর্ষা এলে সামান্য বৃষ্টিতেই ভবনের ছাদ দিয়ে পানি পড়ে৷
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোনিয়া, অন্তরা, সোহেল, আশিক, সাদেকসহ অনেকেই জানায়, মাঝেমধ্যে ছাদের পলেস্তারা খসে৷ এতে অনেকে আহতও হয়েছে৷ বৃষ্টি হলে বই-খাতা সব ভিজে যায়৷ এ জন্য বিদ্যালয়ে আসতেও তাদের ভয় করে৷ অনেকে বিদ্যালয়ে আসা পুরোপুরি বন্ধও করে দিয়েছে৷
অভিভাবক মো. ছালাম সিকদার ও শফিক হোসেন জানান, ১৯৯৭ সালে বিদ্যালয়টি করার পর আর কোনো সংস্কার করা হয়নি৷ ছাদের পলেস্তারা এখন ভেঙে ভেঙে পড়ছে৷ ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠাতেও ভয় করে৷ দ্রুত বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণ করলে তাঁরা চিন্তামুক্ত হতে পারতেন৷
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকিয়া পারভীন জানান, ‘একের পর একজন এসে পরিদর্শন করে গেলেও কোনো লাভ হয়নি৷ এখানে নতুন ভবন নির্মাণ এখন আমাদের প্রাণের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, ‘বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনকে আমরা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি৷ নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ এখনো অনুমোদন হয়নি৷’