পুলিশের চার কর্মকর্তাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা

লক্ষ্মীপুরে ইসমাইল হোসেন ওরফে খোকন হত্যার ঘটনায় আজ রোববার পুলিশের চার কর্মকর্তাসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। দুপুরে জেলার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে নিহত ব্যক্তির স্ত্রী নাহিদা আক্তার বাদী হয়ে মামলাটি দাখিল করেন।

এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে আগামী ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আফসানা আবেদিন।
মামলার আসামি হিসেবে উল্লেখ করা চার পুলিশ কর্মকর্তা হলেন লক্ষ্মীপুর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) উপপরিদর্শক আবুল বাসার, দাসেরহাট পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামাল হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সারোয়ার হোসেন, সদর থানার এসআই মো. জিল্লুর রহিম। মামলার অন্য তিন আসামি হলেন নিহত খোকনের তিন ভাই আবুল কাশেম, আবুল হাসেম ও মানিক।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২ জুন সন্ধ্যায় সাতটার দিকে দুটি মোটরসাইকেল ও একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে সদর উপজেলার তিতারকান্দি বাজার থেকে ইসমাইল হোসেন ও তাঁর সহযোগী সবুজ ওরফে নবাবকে তুলে নিয়ে লক্ষ্মীপুর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যান আসামিরা। ওই দিন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সবুজকে ডিবি কার্যালয়ে রেখে ইসমাইলকে উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের কাঁঠালি এলাকায় নিয়ে পায়ে গুলি করা হয়।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনার পর অন্যতম আসামি সদর থানার এসআই জিল্লুর পুরো ঘটনাটিকে সন্ত্রাসীদের দুই দলের গুলিবিনিময়ের ঘটনা হিসেবে সাজিয়ে গুলিবিদ্ধ ইসমাইলকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিত্সাধীন অবস্থায় ইসমাইলের মৃত্যু হয়। ইসমাইলের সহযোগী সবুজকে পরে ডাকাতির মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বর্তমানে তিনি লক্ষ্মীপুর কারাগারে আছেন।
বাদী নাহিদা আক্তারের আইনজীবী এ কে এম হুমায়ুন কবির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন। ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত ইসমাইল সন্ত্রাসী দিদার বাহিনীর প্রধান দিদারুল আলমের সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে এলাকায় কাজ করতেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবে তিনি পরিচিত ছিলেন।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবুল কাশেম এর সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে জানান, ইসমাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলেন।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার শাহ মিজান শাফিউর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ইসমাইল পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশের গুলিতে নয় বরং দুটি সন্ত্রাসী বাহিনীর গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন। এ হত্যায় পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই বলে তিনি দাবি করেন।