সড়ক ও বাড়ি ঝুঁকিতে রেখে বালু তুলছেন নেতার ছেলে

ঝিনাইদহ বাস টার্মিনালের পাশ থেকে সওজের জায়গায় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করছেন আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলে l ছবি: প্রথম আলো
ঝিনাইদহ বাস টার্মিনালের পাশ থেকে সওজের জায়গায় ড্রেজার দিয়ে বালু তুলে বিক্রি করছেন আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলে l ছবি: প্রথম আলো

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) কাছ থেকে মাছ চাষের চুক্তি করে পুকুর বন্দোবস্ত নিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের এক নেতার ছেলে মমিনুর রহমান ওরফে খুশি৷ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর এবার সেই পুকুর থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন তিনি৷
খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়কের পাশ থেকে এভাবে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে হাইওয়ে সড়ক ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ এ কারণে পাশের পৌর বাস টার্মিনালটিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে মনে করছে পৌর কর্তৃপক্ষ৷
মমিনুর ঝিনাইদহ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুর রহমানের ছেলে৷
ঝিনাইদহ সওজ কার্যালয়ের প্রধান সহকারী নজরুল ইসলাম জানান, পৌর বাস টার্মিনালের পাশে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কে সওজের পুকুরটি সাত-আট বছর আগে মাছ চাষের লক্ষ্যে তিন বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া হয়৷ তিন বছর আগে ওই বন্দোবস্তের মেয়াদ শেষ হয়৷ বর্তমানে ওই পুকুরটির সওজের তত্ত্বাবধানে রয়েছে৷
১৯ জুন বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, পুকুর থেকে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত যন্ত্র দিয়ে বালু তোলা হচ্ছে৷ স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তিন মাস ধরে বালু তুলে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে৷ কয়েকজন শ্রমিক জানান, ইতিমধ্যে শতাধিক ট্রাক বালু বিক্রি করা হয়েছে৷ বালুর চাহিদা থাকায় আরও একটি যন্ত্র বসানোর কাজ চলছে৷
পুকুরপাড়ের বাসিন্দারা জানান, বালু ওঠানোর কারণে ইতিমধ্যেই পাড় ধসে পড়তে শুরু করেছে৷ এভাবে চললে কিছুদিনের মধ্যে হাইওয়ে সড়ক, পৌর বাস টার্মিনালের কিছু অংশের সঙ্গে তাঁদের বাড়িঘরও ভেঙে পড়বে৷

খুলনা–কুষ্টিয়া মহাসড়কের পাশে বালুর স্তূপ l ছবি: প্রথম আলো
খুলনা–কুষ্টিয়া মহাসড়কের পাশে বালুর স্তূপ l ছবি: প্রথম আলো


সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পুকুরটির বন্দোবস্ত ছিল বলে তিনি শুনেছেন৷ কিন্তু বিস্তারিত কিছুই জানেন না৷ তবে মাছ চাষের জন্য বন্দোবস্ত নিয়ে কেউ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করতে পারেন না৷ মহাসড়কের পাশ থেকে যন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করলে সড়ক ধসে পড়তে পারে৷ বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান৷
মমিনুর রহমান বলেন, তিনি বালু বিক্রি করছেন না৷ পুকুরটি মাছ চাষের উপযোগী করতে বালু তুলে জমা করে রাখছেন৷ তা ছাড়া মেশিন দিয়ে যতটুকু গভীর করে বালু তোলা হচ্ছে, তাতে মহাসড়ক বা পাশের বাড়িঘর ধসে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই৷ এখনো পুকুরটির বন্দোবস্ত রয়েছে৷
ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র ও আওয়ামী লীগের নেতা সাইদুল করিম বলেন, ক্ষমতার জোরে সবকিছু করা ঠিক নয়৷ ওই স্থানে যে কাজটি হচ্ছে, তাতে মহাসড়ক, বাস টার্মিনালসহ আশপাশের বাড়িঘরের ক্ষতি হবে৷ বিষয়টি নিয়ে কথা বলেও কোনো লাভ হয়নি৷