বিয়ানীবাজারে ডাকাতের ছুরিকাঘাতে গৃহকর্তা নিহত

সিলেটের বিয়ানীবাজারে গৃহকর্তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে পাঁচ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে একদল ডাকাত। গতকাল শুক্রবার ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের চক্রবাণী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যক্তির নাম আবদুল জলিল (৬৫)।
একই দিনে ময়মনসিংহের তারাকান্দায় শফিকুল ইসলাম (৩৫) নামের এক অটোরিকশাচালকের ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ইসমা বেগম (৩২) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
পুলিশ ও গ্রামবাসী জানান, ভোররাতের দিকে আবদুল জলিলের বাড়িতে সাত-আটজনের একদল ডাকাত হানা দেয়। এরা সবাই হাফপ্যান্ট পরা ছিল। ডাকাতেরা বাড়ির প্রধান দরজা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় ঘরে থানা নারী, শিশুসহ পাঁচজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লুটপাট চালায়। এ অবস্থায় আবদুল জলিল ‘ডাকাত-ডাকাত...’ বলে চিৎকার করলে অস্ত্রধারী দুই ডাকাত তাঁকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে আলমারি থেকে ছয় ভরি স্বর্ণালংকারসহ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
চারখাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী জানান, ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় খুন হয়েছেন আবদুল জলিল। তাঁর বুকে ও পিঠে একাধিক ছুরিকাঘাত দেখা গেছে।
লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর কথা জানিয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, ঘটনা তদন্তের পাশাপাশি ডাকাতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, শফিকুলের বাড়ি ফুলপুর উপজেলার কাজিয়াকান্দা গ্রামে৷ ময়মনসিংহ-ফুলপুর সড়কে ভাড়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালাতেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর থেকে শফিকুলের সঙ্গে তাঁর পরিবার ও অটোরিকশার মালিক যোগাযোগ করতে না পেরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কোনো সন্ধান পাননি। গতকাল শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে ময়মনসিংহ-ফুলপুর সড়কের তারাকান্দা উপজেলার কাকনি এলাকায় তাঁর লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় ব্যক্তিরা পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
পুলিশের ধারণা, অটোরিকশাটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে শফিকুলকে বৃহস্পতিবার রাতের কোনো একসময় ওই সড়কের কোনো স্থানে দুর্বৃত্তরা মেরে লাশটি কাকনি এলাকায় ফেলে রেখে যায়। তাঁর পেটের বাঁ পাশে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
ইসমা বেগমের (৩২) স্বামীর নাম নবীন হোসেন। তিনি শ্রীমঙ্গল শহরে রিকশা চালান। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার আরামবাগের একটি ভাড়া বাসা থেকে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তাঁদের গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ওমর ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গতকাল শুক্রবার বলেন, ‘আমরা গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পেয়েছি।’