শহীদ মিনার ঘেঁষে শৌচাগার!

গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ঘেঁষে শৌচাগার নির্মাণ করা হচ্ছে৷ ফলে শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষা নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে৷
খোলাহাটি গ্রামের চাকরিজীবী আসোয়াত আলী অভিযোগ করেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন৷ তাঁরা উপযুক্ত স্থান চিহ্নিত না করেই শৌচাগার নির্মাণ করছেন৷ অথচ শৌচাগার নির্মাণে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের পশ্চিম পাশে অনেক জায়গা পড়ে আছে৷ যেখানে শৌচাগার নির্মাণ করা হচ্ছে, এতে শহীদ মিনারের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে৷
তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসনা বানু বলেন, বিদ্যালয়ে ১০ জন শিক্ষক ও ৬১২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে৷ শহীদ মিনারের পেছনের জায়গাটি এমনিতেই শিশু শিক্ষার্থীরা প্রস্রাবখানা হিসেবে ব্যবহার করত। তাই সেখানে শৌচাগার নির্মাণ করা হচ্ছে৷ তবে সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াবে না৷
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয় ভবনসংলগ্ন শহীদ মিনারটি দাঁড়িয়ে আছে৷ শহীদ মিনারটি ঘেঁষে পেছনে শৌচাগার নির্মাণের কাজ চলছে৷ আশপাশে রাখা হয়েছে ইট, সিমেন্ট ও বালু। ছাদ ঢালাইয়ের জন্য শহীদ মিনারের বেদিতে খোয়া, বালু ও সিমেন্ট মিশ্রণের কাজ চলছে। সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে স্থানীয় এক সমাজকর্মীর হস্তক্ষেপে বেদি থেকে খোয়া ও বালু সরিয়ে পাশের মাটিতে নেওয়া হয়৷ পরে মাটিতেই মিশ্রণকাজ সম্পন্ন করে ছাদ ঢালাই দেওয়া হয়৷
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি-৩-এর আওতায় গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ শৌচাগারটি নির্মাণ করছে৷
খোলাহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সারওয়ার বলেন, বিদ্যালয়ের পাশেই আমার বাড়ি। স্থানীয় জনগণের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সদর আসনের সাংসদের আর্থিক সহায়তায় গত বছর শহীদ মিনারটি নির্মাণ করা হয়৷ এর পর থেকে এখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় কর্মসূচি পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে শৌচাগারটি সেখানে নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি নির্মাণ করা হলে দুর্গন্ধ ছড়াবে৷ এ কারণে এখানে অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবে না।
জানতে চাইলে গাইবান্ধা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম হালিম উদ্দিন বলেন, ‘বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেখানে স্থান নির্ধারণ করে দেয়, সেখানেই শৌচাগার নির্মাণ করা হয়৷ শহীদ মিনার ঘেঁষে শৌচাগার নির্মাণের অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’